তোকে_অনেক_ভালোবাসি-------পর্ব_১৫
নিশা আপুর সাথে শপিং এ এসেছি। শপিং শেষ করে বেড় হচ্ছি পেছন থেকে কেউ আরিশা বলে ডাকলো। আমি নিশা আপু দুজনেই পেছনে ঘুরে তাকালাম। একটা মেয়ে হাসি মুখে আমাদের সামনে এসে দাড়ালো। খুব চেনা চেনা লাগছিলো মেয়েটিকে। মেয়েটি মুচকি হেসে বললো.......
তোমার নাম আরিশা?
হ্যা। কিন্তু আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?
সাদাফকে চেনো নিশ্চই? আদ্রর ফ্রেন্ড।
হ্যা চিনি। আপনাকে আগে কোথায় যেনো দেখেছি মনে হচ্ছে?
আদ্রর সাথে দেখেছো আমাকে। আমার নাম প্রিথা সাদাফের গার্লফ্রেন্ড। সাদাফের আর আদ্রর কাছে তোমাকে নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। আর তোমার ছবি দেখেছিলাম আদ্রর ফোন থেকে। তাই তোমাকে চিনতে প্রবলেম হয় নি।
ও আচ্ছা। আপু সাদাফ ভাইয়ার সাথে আসবেন আমাদের বাড়িতে।
হুম যাবো। তো এখন বলো কি খবর তোমাদের?
আমি বুঝতে পারছি উনি আদ্র আর আমার ব্যাপারে জানতে চাইছে। কিন্তু নিশা আপুর সামনে কি বলবো এখন। নিশা আপু চুপ করে আমার পাশেই দাড়িয়ে আছে। আমি আড় চোখে নিশা আপুর দিকে তাকিয়ে সামনে তাকালাম। প্রিথা আপু হয়তো কিছু বুঝতে পেরেছে তাই উনি হাসি মুখে বললো.....
আরিশা এটা কে তোমার সাথে?
উনার নাম নিশা আদ্র ভাইয়ার খালাতো বোন।
প্রিথা এবার বুঝতে পারলো আরিশা কেনো কিছু বলতে চাইছে না। প্রিথা আরিশার গালটা একটু টেনে বললো.....
আরিশা তুমি খুব মিষ্টি একটা মেয়ে। ভালো থেকো কেমন, আসছি।
আচ্ছা আপু।
প্রিথা চলে যেতেই নিশা বললো......আরিশা আদ্রর ফ্রেন্ডকে তুমি চেনো কি করে?
আমাদের বাড়িতে এসেছিলো আদ্র ভাইয়ার সাথে। আর যে মেয়েটি কথা বলে গেলো ওটা ওই ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড।
ওহ। মেয়েটি কিসের খবর জানতে চাইলো?
আরে তেমন কিছু নয়। আপু চলো এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
আরিশা আগে হাটা দিলো নিশা ওখানেই দাড়িয়ে সন্দেহের দৃষ্টিতে আরিশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে মনে মনে বলছে.....আদ্র আর আরিশার ব্যাপারটা কেমন অদ্ভুত লাগছে। আগে যখন এসেছিলাম ওদের মাঝে তেমন কিছুই দেখতে পাইনি। কিন্তু এবার আসার পর থেকেই ওদের দুজনেই আচরণ অন্য রকম লাগছে। আর এ মেয়েটি তো আদ্রর ফ্রেন্ডের গার্লফ্রেন্ড সেও বললো আরিশাকে নিয়ে অনেক কথা শুনেছে। আচ্ছা আদ্র আরিশাকে নিয়েই কেনো বলতে যাবে ওই মেয়েটিকে? এর পেছনে কি বিশেষ কোনো কারন আছে??
.
.
রাত ১২ টা বাজে প্রায় ঘুম আসছিলো না। নিশা আপু ঘুমিয়ে পড়েছে। নিশা আপু আসার পর থেকে আদ্রর সাথে তেমন ভাবে কথা হয় না। ইচ্ছে করছে উনাকে একটু দেখতে কিন্তু এত রাতে তো সম্ভব নয়। তারপরেও যেনো মন মানছিলো না ছুটে যেতে মন চাইছে আদ্রর কাছে। মন জিনিসটা বড়ই গোলমেলে কখন কি চায় সে নিজেও জানে না।আচ্ছা এত রাতে উনার রুমে গেলে কি উনি আমাকে খারাপ ভাববে?নাহ খারাপ কেনো ভাববে আমাকে তো ভালোবাসে উনি। সব ভাবনা সাইডে রেখে পা বাড়ালাম আদ্রর রুমের দিকে। আমার রুমের বাইরে এসে থেমে গেলাম.....রাত তো অনেক হয়েছে হয়তো উনি ঘুমিয়ে পড়েছে এখন। তাছাড়া দরজাটাও খোলা রাখবে না নিশ্চই।
মন খারাপ করে রুমে চলে এলাম। জানালার পর্দা সড়িয়ে চোখ রাখলাম দূর আকাশে। আকাশের বুকে থাকা পূর্ণ চাঁদটা আলোকিত করে রেখেছে চারিদিক। তাঁরা গুলো মিটমিট করে জ্বলছে। মৃদু বাতাসে আমার চুলগুলো বারবার মুখে এসে পড়ছে। এমন মনোরম দৃশ্যে মুখরিত হয়ে মনের তিক্ততা অনেকটা কমে এসেছে।জানালার গ্রীল ধরে চাঁদের উপর দৃষ্টি রেখে দাড়িয়ে আছি। হঠাৎ ফোনের রিংটন বেজে উঠলো। এতো রাতে কে কল দিলো? বেডের কাছে আসতেই আদ্রর হাসি মুখের ছবিটা দেখতে পেলাম। তারমানে উনি এখনো জেগে আছে! কিন্তু এতো রাতে ফোন দিলো কেনো? ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে উঠলো......
সরি আরু তোর ঘুমটা ভাঙিয়ে দিয়েছি বলে। কি করবো বল আমার যে ঘুম আসছিলো না। খুব বেশি মিস করছিলাম তোকে। তাইতো তোকে বিরক্ত করলাম। তুই কি রাগ করেছিস আরু তোর ঘুম ভাঙালাম বলে? দেখ রাগ করলেও আমার কিছু করার নেই আমার এখন তোকে দরকার বুঝলি।
উনি একদমে কথাগুলো বলেই থামলো। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজেই বলে চলেছে যদি আমার জায়গায় নিশা আপু ধরতো ফোনটা! উনার কি সেটুকু সেন্স নেই!
আরু কি হলো চুপ করে আছিস কেনো?
আমি জানালার ধারে এসে আস্তে করে বললাম.....ফোনটা আমি না ধরে যদি নিশা আপু ধরতো। আমিই রিসিভ করেছি কিনা না জেনেই বলতে শুরু করলে!
আরু সোনা আমার এতো ভাবার সময় ছিলো না কে রিসিভ করেছে। আর নিশা ধরলেই বা কি হবে কদিন পরে তো সবাই জানতে পারবে। যাই হোক তোর ঘুম ভাঙানোর জন্য সরি।
আমি তো ঘুমাইনি জেগে ছিলাম।
কিহ! তুই এতো রাতে জেগে ছিলি কেনো? সাড়ে বারোটা বাজে।
ঘুম আসছিলো না তাই জানালার ধারে দাড়িয়ে চাঁদ দেখছিলাম।
ঘুম না আসার কারনটা কি আমি?
না তো তুমি কারন হতে যাবে কেনো এমনিতেই ঘুম আসছিলো না।
হুমম জানি আমি। আরু তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
আমার মনটা যেনো খুশিতে নেচে উঠলো কোনো কিছু না ভেবেই বললাম.....আমারো খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোমায়।
আদ্র হেসে উঠে বললো.....এইতো ঘুম না আসার কারনটা বুঝতে পেরেছি। আরু রুম থেকে বেড় হ।
কেনো?
বেড় হতে বলেছি তোকে, তোর কেনোর উত্তর দেওয়ার সময় নেই। এক্ষুনি বেড় হয়ে আয়।
উনি ফোনটা কেটে দিলো আমি নিশা আপুর কাছে এগিয়ে দেখলাম গভীর ঘুমে মগ্ন। ফোনটা বেডে রেখে বেড়িয়ে এলাম রুম থেকে। বাইরে বেড় হতেই আদ্রকে দেখতে পেলাম। কালো টি শার্ট আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরে উনার রুমের দরজায় হেলে দাড়িয়ে আছে। এদিকে আমি যে কি বেশে বেড়িয়ে এসেছি সেদিকে খেয়াল নেই। আদ্র আমার সামনে এসে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বাকা হেসে বললো.......
বাহ,আমার আরু সোনাকে দেখতে দারুন লাগছে তো। আমার মাথাটা আরো খারাপ করতে এভাবে এসেছিস তাইনা?
আমি আবার কি করলাম আমি তো......এটুকু বলেই খেয়াল হলো আমি তো ওড়না রেখেই বেড়িয়ে এসেছি! আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো ঘুরে রুমের দিতে দৌড় দিতে গেলে আদ্র আমার হাত ধরে কাছে টেনে নিলো। লজ্জা পেয়ে আমি মাথা নিচু করে নিলাম। উনি বলতে লাগলো......
ইসস এতো লজ্জা পেয়ো না গো। না হলে কখন যে টুপ করে খেয়ে ফেলবো তোমায় বুঝতেও পারবো না। আমার কাছে কিসের এতো লজ্জা হুম। আরু সোনা দেখি তাকাও আমার দিকে।
আমি চোখ তুলে তাকাতেই পারছিলাম না। ইচ্ছে করছিলো নিজেকে লুকিয়ে ফেলি। আমি মনের অজান্তেই আদ্রকে জড়িয়ে ধরে উনার বুকে মুখ লুকালাম। আমি হঠাৎ জড়িয়ে ধরায় আদ্র থম মেরে দাড়িয়ে রইলো উনি হয়তো আমার জড়িয়ে ধরাটা আশা করে নি। কয়েক সেকেন্ড এভাবে থেকে আমি চমকে উঠলাম উনাকে জড়িয়ে ধরেছি ভেবে। আমি উনাকে ছেড়ে দিতে নিলে আদ্র নিজের হাত উঠিয়ে আমাকে জড়িয়ে নিলো........
আরু তুই আমাকে জড়িয়ে ধরলি! আমি তো ভাবতেই পারছি না আমার আরু আমার এতো কাছে আমার বুকে জড়িয়ে আছে।
.
.
সবাই মিলে নাস্তা করতে বসেছি আদ্র নিচে আসতেই নিশা আপু বলে উঠলো.......
আদ্র এতো দেরি হলো কেনো আসতে? আয় এখানে বস।
নিশা আপু নিজের পাশের চেয়ারটা টেনে দিলো। আদ্র নিশা আপুর কথায় কান না দিয়ে আমার পাশের চেয়ারে বসে পড়লো। আমি আড় চোখে একবার উনাকে দেখে নিশা আপুর দিকে তাকালাম। মুখটা কালো করে ফেলেছে দেখে মনে হচ্ছে আদ্রর দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছে।
আদ্র খাচ্ছে আর নিজের পায়ের আঙ্গুল দিয়ে আমার পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করছে। আমার শরীরে কাটা দিয়ে উঠছিলো এমনটা করায়। সবাই এখানে আছে কোনো মানে হয় এ রকম করার!খাবার টাও যেনো আমার গলায় আটকে গেছে। খেতে পারছি না। আদ্র চুপচাপ খেয়ে চলেছে। হনুমান কোথাকার আমার খাওয়ার বারোটা বাজিয়ে নিজে আরাম করে খাচ্ছে।
কি হলো আরিশা খাচ্ছিস না কেনো??
কাকিমা আমার পেছনে দাড়িয়ে বললো। আমি উঠে দাড়িয়ে বললাম......আমার খাওয়া হয়ে গেছে।
আদ্র আমার হাত ধরে বসিয়ে বললো.....মাত্রই তো খেতে বসলি এতো তাড়াতাড়ি খাওয়া হয় নাকি। চুপচাপ শেষ কর সবটা।
আদ্র আরিশা তো বলছে ওর খাওয়া হয়ে গেছে তাহলে ওকে জোর করছিস কেনো?
আদ্র নিশা আপুর দিকে তাকিয়ে বললো......আরুর খাওয়া হয়নি আমি জানি। তাই ওকে খেতে বলেছি এতে জোর করার কি হলো।
নিশা আপু আর কিছু বললো না। আমি জানি বাকীটা না খেলে আদ্র আবারো আমাকে খেতে বাধ্য করবে তাই এখনি খেয়ে নিলাম। রুমে আসতেই নিশা আপু বললো.....
আরিশা একটা কথা বলবো তোমায়?
হ্যা আপু বলো।
আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি আসার পর থেকে।আদ্র তোমার প্রতি এতো কেয়ারিং কেনো?
নিশা আপুর মনে যে কিছুটা সন্দেহ ঢুকেছে বেশ বুঝতে পারছি। কিন্তু আমার এখন কি বলা উচিৎ? নিশা আপু আবারো কিছু বলতে নিলে অথই এলো.......
আরিশা আপু নিচে চলো মনিকা আপু এসেছে।
যাক মনিকা এসে ভালোই হয়েছে নিশা আপুর থেকে তো বাঁচলাম। নিচে এসে দেখলাম মনিকা আর ওর বাবা এসেছে। আমাকে দেখেই মনিকা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আগামি সপ্তাহে মনিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে তারই দাওয়াত দিতে এসেছে। মনিকা বলছে বিয়ের তিন দিন আগে আমাকে যেতে মাকেও রাজি করিয়েছে। আমারো ইচ্ছে ছিলো আমার বেস্টুর বিয়েতে আগে যাবো খুব মজা করবো। কিন্তু আদ্র আমার ইচ্ছেতে এক বালতি পানি ঢেলে সব আনন্দ মাটি করে দিলো।
মনিকারা চলে যাবার পর আমি উপরে আসছিলাম আদ্র উপরে সিঁড়ির সামনে দাড়িয়ে ছিলো আমি উপরে উঠতেই উনি আমার হাত ধরে নিজের রুমে নিয়ে এলো।
কি হলো আমাকে এখানে নিয়ে এলেন কেনো??
কারন আছে তাই এনেছি। আরু তুই মনিকার বিয়েতে তিনদিন আগে যাবি না বিয়ের দিন বাড়ির সকলের সাথে যাবি।
কি বলছো তুমি তখন তো অর্ধেক বিয়ে শেষ হয়ে যাবে। মা তো বলেছে যেতে আমি আগেই যাবো আমি মনির একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড আর আমি ওর পাশে থাকবো না তা কি করে হয়।
আরু আমি যেতে বারন করেছি তুই যাবি না।
আদ্র ধমকের সাথে কথাটা বলতেই আমি কেপে উঠলাম। আদ্র আমার দুগালে হাত রেখে স্লো ভয়েজে বললো.....
আরু আমার কথাটা একটু বুঝার চেষ্টা কর,বিয়ে বাড়িতে অনেক ধরনের ছেলেদের আমদানি থাকে আমি চাইনা আমার আরু তাদের চোখে পরুক। তাছাড়া বিয়ে বাড়িতে সব সময় নিজেকে সেভ রাখা যায় না। আর আমি তোকে যেখানে তিন মিনিট না দেখে থাকতে পারি না সেখানে তিনদিন কি করে থাকবো বল।
আজব তো! আমি কি ছেলেদের কাছে দিয়ে ঘুরঘুর করবো নাকি যে তাদের চোখে পড়বো? ঠিকআছে আমাকে নিয়ে তোমার ভয় তো তুমিও চলো আমার সাথে তাহলে আর না দেখে থাকতে হবে না।
আদ্র রেগে আমার থেকে দূরে গিয়ে বললো......তুই তাহলে আমার কথা শুনবি না তাইতো। যা যেখানে খুশি যা আমি আর তোকে বাধা দেবো না।
আদ্র খুব রেগে গিয়েছে। সামান্য একটা ব্যাপারে এভাবে রেগে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না। আমি এগিয়ে গিয়ে উনার হাত ধরতেই এক ঝটকায় আমার হাত ছাড়িয়ে বললো......বলেছি তো তোকে বাধা দেবো না তাহলে হাত ধরে কি বলতে চাইছিস। আর কিছু বলতে হবে না যা এখান থেকে।
আমার কথাটা তো শোনো।
আরু যেতে বলেছি তোকে।
উনার এমন আচরনে খুব খারাপ লাগছিলো। কাছের মানুষ একটু রেগে কিছু বললে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক,আমার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আমি তো এটাই বলতে চেয়েছিলাম মনির বিয়ের দিনেই যাবো কিন্তু উনি সেটা না শুনেই আমাকে চলে যেতে বললো। আর কিছু না বলে আমি মন খারাপ করে বেড়িয়ে এলাম উনার রুম থেকে।
.
.
সারাদিনে রুম থেকে আর বেড় হই নি। আদ্রর ওমন আচরনে কষ্ট হচ্ছিলো আমার। নিশা আপু বারবার জানতে চেয়েছে মন খারাপ কেনো আমি এটা সেটা বলে এড়িয়ে গিয়েছি।
দুপুরে খাইনি রাতেও যাইনি খেতে আদ্র একবারো আসেনি আমি খেয়েছি কিনা জানতে ঠিকআছে আমিও যাবো না উনার সামনে। কি ভেবেছে নিজেই শুধু রাগ দেখাতে পারে আমি পারি না।
ওদিকে আদ্রও আজ রুম থেকে বেড় হয়নি খায়ও নি কিছু। আদ্রর মা খাবার নিয়ে আদ্রর রুমে এলো। আদ্র কপালে হাত রেখে শুয়ে আছে।
আদ্র কি হয়েছে তোর শরীর খারাপ?
মায়ের গলা শুনে আদ্র উঠে বসলো.......না মা আমি ঠিকআছি।
তাহলে কি হয়েছে?দুপুরে খাসনি এখনো নিচে নামলি না। আরিশাকেও জোর করে খাওয়াতে পারি নি। তুই কিছু বলেছিস ওকে?
মা আরু এখনো খায় নি?
নাহ সেই সকালে যা নাস্তা করেছে।
এ খাবারটা কি আমার জন্য এনেছো?
হ্যা সারাদিন তো খাসনি তাই নিয়ে এলাম।
আদ্র মায়ের হাতে থেকে খাবার প্লেটটা নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আদ্রর মা হা করে বসে আছে তবে তার বুঝতে বাকী নেই আদ্র খাবার নিয়ে কোথায় গেলো।
আরিশার রুমের দরজা লক করা ভেতর থেকে আদ্র এসে নক করলো। নিশা দরজা খুলতেই আদ্র বললো......আরিশা কোথায়?
আরিশা তো ব্যালকনিতে কোনো দরকার? আদ্র তোর হাতে খাবার কেনো?
আদ্র নিশার কথার উত্তর না দিয়ে ভেতরে ঢুকে বললো......নিশা তুই কিছুক্ষণের জন্য অথই এর রুমে যা।
কেনো?
যেতে বলেছি যা।
নিশা আপু কোথাও যাবে না। তুমি আমার রুমে কেনো এ সময়?
আরিশা ব্যালকনির দরজায় দাড়িয়ে আদ্রকে কথাটা বলতে আদ্র ওর দিকে তাকিয়ে বললো......একটা থাপ্পড় মেরে সব গুলো দাঁত ফেলে দিবো তোর। কিসের এতো রাগ তোর হ্যা?সারাদিন না খেয়ে বসে আছিস। আবার এখন উল্টো জেদ দেখাচ্ছিস।
নিশা তোকে না বললাম অথই এর রুমে যেতে।
নিশার কাছে ওদের হাবভাব মটেও সুবিধার লাগছে না। আদ্র রেগে আছে বুঝতে পেরে কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।
আদ্র প্লেট বেডের উপর রেখে আমার হাত ধরে এনে বেডে বসালো। উনি রেগে আছে তাই কিছু বলার সাহস পাচ্ছি না। আদ্র আমার পাশে বসে এক লোকমা ভাত তুলে আমার মুখের সামনে ধরে বললো......
আরু হা কর।
খাবো না আমি। মুখ ঘুরিয়ে বললাম।
হা করতে বলেছি তোকে।
বললাম তো খাবো না তুমি........এটুকু বলে উনার চোখের দিকে তাকাতেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম ভীষণ রেগে আছে। আমি একটা ঢোক গিলে হা করলাম উনি কয়েক লোকমা খাওয়ানোর পর উনার চেহারা স্বাভাবিক হলো। আমি আস্তে করে বললাম.....
তুমি খেয়েছো?
না খাই নি তুই খাওয়া শেষ কর তারপর তোকে খাবো।
কিহ! বলছো কি তুমি?
চুপ কোনো কথা নয় খেয়ে নে।
হুম। খাবো দুজনে একসাথে। আমি ভাত তুলে আদ্রর মুখের সামনে ধরলাম উনি চেয়ে আছে আমার দিকে......কি দেখছো হুম তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমিও খাও নি। নাও হা করো।
আদ্র মৃদু হেসে খেয়ে নিলো। দুজনের খাওয়া শেষ হতে আদ্র বললো.......মনিকার বিয়েতে যেতে দেবো না বলে এতো রাগ ঠিকআছে যাবি তবে তিনদিন আগে নয় একদিন আগে।
থাক আমি যাবো না বিয়ের দিনেই যাবো।
বললাম তো যাবি এখনো রেগে আছিস?
না রেগে নেই কষ্ট পেয়েছিলাম তোমার আচরনে।
সরি আরু সোনা আর কষ্ট দিবো না তোকে।
আদ্রর ইনোসেন্ট ফেস দেখে ফিক করে হেসে উঠলাম। উনি বুকে হাত দিয়ে বললো......এমন করে হেসো না গো বুকে লাগে।
No comments