অদৃশ্য_পরীর ভালোবাসা ------ পর্বঃ ০৭
অনু বোরখা খুলছেনা দেখে আম্মু আর জোরাজুরি করলোনা ৷ অনুকে মিষ্টি হেসে বলল,
----ঠিকআছে, তোর যখন ইচ্ছা তখন বোরখা খুলিস ৷ সমস্যা নাই এতে ৷ তবে, বুঝতে পারছি তুই কেন বোরখা খুলতে চাচ্ছিস না, আবার মুখটাও ঢেকে রেখেছিস? ভার্সিটিতে যাবি বলে অনেক সাজুগুজু করেছিস, এজন্য মুখ দেখাতে লজ্জা পাচ্ছিস ৷ ভাবছিস আমি নিন্দাবো তোকে ৷ পাগলী মেয়ে! তোর মত সুন্দরী মেয়ের সাজুগুজু দেখে কেন নিন্দাবো?
.
অনু অপরাধীর স্বরে বলল,
----আন্টি, এমন কিছুই নয় ৷ এমনিতেই বোরখা খুলতে মন চাচ্ছেনা ৷
----ও আচ্ছা, তাইলে ঠিক আছে!
.
আম্মু রুমে চলে গেল ৷ অনুও ড্রয়িংরুম থেকে তার রুমের দিকে চললো ৷ আর আমি চিন্তায় ডুবে গেলাম অনুর ব্যাপারটি নিয়ে ৷ আম্মু এত করে বলার পরও সে বোরখা খুললোনা এমনকি নেকাপটাও খুললোনা, এর কি কারণ থাকতে পারে?
ভাবতে ভাবতে মাথার তাঁর ছিঁড়ে ফেলছি তবুও এর সঠিক কারণ খুঁজে পেলাম না!
.
ঘন্টাখানেক পর অনু একটা কালো রঙের শাড়ি পড়ে আমার সামনে এসে হাজির হলো ৷ হাতে লুডুর কার্ড ছিল ৷ অনুর মুখে মিষ্টি হাসি বিরাজ করছে ৷ আমাকে আদুরে গলায় বলল,
--- মুখ খুলেই হাজির হলাম ৷ এবার চলুন লুডু খেলি দুজন মিলে!
.
অবাক হলাম অনুর কথায় ৷ সে আমার সাথে এত দরদ মেখে কথা বলছে কোন মতলবে? আবার লুডুও খেলতে চাইছে ৷ ভ্রুজুগল কুঞ্চিয়ে তাকিয়ে রইলাম অনুর গাল বরাবর ৷ এখন কেন যেন তাকে একটু কালো কালো লাগছিল! ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলাম মুখটা কেমন যেন পাউডার পাউডার লাগছে ৷ নিশ্চয় নিজেকে ফর্সা হিসেবে দেখতে মেকআপ করেছে ৷ কিন্তু ফর্সা হতে গিয়ে তো কালো হয়ে আসছে সে ৷ তার ফর্সা হবারই বা কি দরকার? আমি তো এমনিতেই তার জন্য পাগল ৷ সে যদি আমার উপর থেকে সমস্ত রাগ, অভিমান ভুলে শুধু হাতটা ধরে এটাই তো অনেক আমার জন্য ৷ কখনোই ছাড়বোনা তাকে ৷ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বো তবুও আমার হাতে তার হাত আঁকড়ে থাকবে ৷ দুজনে অটুট বন্ধনে আবদ্ধ থাকব!
অনুর অফার শুনে খুশিতে যেন নেচে উঠলো মনটা ৷ আত্মহারা আমি ৷ আনন্দ লাগছিল খুব ৷ আনন্দের আতিসাহ্যে থতমত খেয়ে তাকে বললাম,
----চলো খেলি ৷ তবে একটা শর্ত মানতে হবে!
.
অনু কপালে ভাঁজ ফেলে গলার স্বর উঁচু করে বলল,
----কি শর্ত? লুডু খেলতে শর্ত লাগে নাকি?
----আমার সাথে খেলতে লাগে ৷ যদি খেলায় আমি জিতি তাহলে ১ হাজার টাকা দিবে তুমি ৷ আর তুমি জিতলে আমি তোমাকে ১হাজার টাকা দিবো ৷ এটাই শর্ত ৷ এটা মেনে নিলে খেলবো অন্যথায় খেলবোনা!
----এটা কোনো শর্ত হলো? নাকি বাজি? জুয়া হয়ে গেল ৷ আমি জুয়া খেলিনা!
----তাহলে তুমি হারলে ১০ টা ঘুষি, আমি হারলে ১০টা ৷ কি এটাতে রাজি?
.
অনু কপালে ভাঁজ ফেলে ভাবতে লাগলো কিছুসময় ৷ অতঃপর সম্মতি জানিয়ে বলল,
----হুম, এতে রাজি হওয়া যায় ৷ তবে খেলায় চিটারি করলে কিন্তু আপনার খবর আছে!
-----আচ্ছা!
.
লুডু খেলতে লাগলাম ৷ যতোক্ষণ অনুর ছক্কা পড়ছিলনা ততোক্ষণ তার চোখে মুখে হতাশার ছাঁপ বিরাজ করছিল ৷ কিন্তু যখনই ছক্কা পড়লো তখন তার মুখটা পূর্নিমার চাঁদের মত জ্বলজ্বল করছিল ৷ তার মুখে দুষ্টুমি হাসি লেগে ছিল সবসময় ৷ অনুর হাসিমাখা মুখ দেখে মনটা যেন অন্যরকম ভাললাগায় মাতোয়ারা হয়ে গেল ৷ আমার গুটি যখন তার গুটি দিয়ে খেয়ে দিতো তখন যে সে কিরকম খুশি হতো যা বলার মত নয় ৷ যেন পৈশাচিক আনন্দ পেতো আমার গুটি খেতে পেরে ৷ অনুকে নিয়ে এমন আনন্দঘণ মুহূর্ত কাটাবো এটা কল্পনায় চাওয়া ছিল মাত্র, এত সহজে বাস্তবে পূরণ হবে ভাবিনি ৷ অনুকে নিয়ে এভাবে সারাজীবন ধরে হাসি-খুশিতে আনন্দঘণ মুহূর্তের মধ্য দিয়ে প্রতিটাদিন যদি কাটিয়ে দিতে পারতাম তবে কতই না ভাল হতো ৷ অবশেষে, অনু নয় আমিই খেলায় জিতলাম ৷ খেলায় জয়লাভের চিন্তা ছেড়েই দিয়েছিলাম অনুকে জয়ী দেখবো বলে ৷ জয়লাভের পর তার মুখে কিরকম খুশির জোয়ার ভেসে ওঠে সেটার অপেক্ষা করছিলাম ৷ কিন্তু অনু নয় আমিই জিতে গেলাম ৷ অনু কষ্ট পেলো নাকি খুশি হলো এটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছিল ৷ তার অভিব্যক্তিতে ঠিক বুঝতে পারা গেল না ৷ আচমকা অনু দুষ্টুমির গলায় বলল,
----শরীরের ঠিক কোথায় মারবেন আমাকে? আমি কিন্তু একটা জায়গাতেই মারার সুযোগ দিব, অন্য কোথাও না!
.
হকচকিয়ে উঠে অস্ফুট স্বরে জিজ্ঞেসা করলাম,
-----কই মারবো?
.
অনু গলার নিচে হাত দিয়ে ইশারা করে বলল,
-----এই যে এখানে!
.
চোখ কপালে উঠলো আমার ৷ এদিক সেদিক তাকিয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললাম,
-----ওখানে! ওখানে মারলে ব্যথা পাবেনা?
.
দুষ্টুমির হাসি হেসে বলল,
-----পাগল নাকি? হাত দিয়ে মারতে দিব নাকি?
----তো?
----হাত বাদে শরীরের যেকোনো অঙ্গ দিয়ে মারতে হবে!
.
অনুর কথা শুনে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল ৷ তার চালাকি বুঝতে পারছি ৷ তবে অবাক হচ্ছি তার এরকম বদলে যাওয়া দেখে ৷ রাতে সে আমার উপর যে পরিমাণ রেগে ছিল, মনে তো হয়েছিল সে আর কথায় বলবেনা আমার সাথে ৷ কিন্তু আজকে তার পিরিতের কথাবার্তা ও মধুর আচরণ শুরু হয়ে গেছে!
.
আমিও দুষ্টুমি মাখা কন্ঠে বললাম,
----কিন্তু ড্রয়িংরুমে যদি তোমার গলার নিচের দিকে মারধর করি তাহলে কি ভাল দেখাবে বিষয়টা?
.
অনু রাগে চোখ রক্তিম বানিয়ে শক্তকন্ঠে বলল,
----থাক, আপনি না পারলে লাগবেনা ৷ পরবর্তিতে আর লুডুই খেলবোনা আপনার সাথে!
.
অনুর কথাতে অভিমানের রসকষ খুঁজে পেলাম ৷ তাকে কিছু না বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম ৷ অতঃপর তার হাতটা ধরলাম ৷ হাত ধরে টেনে তুললাম ৷ অনুকে আমার রুমের দিকে নিয়ে গেলাম ৷ দরজাটা বন্ধ করে দিলাম ৷ অনুকে বিছানায় শুয়েও দিলাম ৷ অথচ অনুর কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই এতে ৷ সে অবাক চোখে শুধু তাকিয়ে আছে ৷ চোখে মুখে কামনার ছাঁপ স্পষ্ট ৷ সে নীরব ও নিস্তব্দ মূর্তিমানবীর রুপধারণ করে আছে তবে কাঁপছে ৷ ধীরেধীরে তার কাঁপন বেড়ে গেল ৷ অনু বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে ৷ তার চোখ জোড়া আমাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ৷ চোখ যেন চাচ্ছে আমি যেন ভালবাসাতে ভরিয়ে দিই তাকে ৷ অনুর পাশে নিজের শরীরটা মেলে ধরলাম ৷ তার কানে মুখ রেখে ফিসফিস করে বললাম,
----খেলায় যেহেতু হেরেছো শাস্তি পেতেই হবে ৷ তো প্রস্তুত তো তুমি?
অনু কাঁপা ঠোঁটে ভাঙ্গা গলায় খুবই ক্ষীণস্বরে বলল,
----হুম,প্রস্তুত!
.
চোখ দুটো বন্ধ করে ৷ ঘণ ও লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে দম বন্ধ করলাম ৷ কাঁপা দেহ নিয়ে অনুর দেহের উপর লুটিয়ে পড়লাম ৷ অতঃপর তার বুকের উপরে ঠোঁটের পরশ বুলিয়ে দিলাম ৷ পুরো শরীরটা ঝাঁকি মেরে উঠলো ৷ মনে হলো চুম্বক তাড়িৎ হয়েছে ৷ বুকের ভেতরে কেমন এক ধাক্কা অনুভব করলাম ৷ তবে সুপ্ত ভাললাগার অনুভূতি বয়ে গেল ৷ বিদ্যুতের শক খাবার মত অনুভূতির পাশাপাশি সীমাহীন সুখ হ্নদয়ের গহীনে অনুভব করলাম ৷ কিন্তু এতকিছুর পরও অপরাধবোধ কাজ করছিল ৷ অনুর শরীরটা এত সহজে আমার হয়ে গেল অথচ সে কিছুই বলছেনা? এর কারণ কি হতে পারে? একটা মেয়ে এত সহজে এটা মেনে নেয়? নিশ্চয় গড়বর রয়েছে কিছু?
থাকতে পারলাম না অনুর দেহে, ততক্ষণাত উঠে এলাম ৷ আমি উঠে এসেছি দেখে অনু আহত পাখির মত করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ৷ চোখে মুখে না পাওয়ার কষ্টের ন্যায় বিষন্নতার ছাঁপ লক্ষ্য করলাম ৷ মৃদ্যুস্বরে অনু বলল,
----কি হলো উঠে গেলেন কেন? কোনো সমস্যা?
.
অনুর কথার জবাবে কোনো উত্তর না দিয়ে বিছানা থেকে উঠতে লাগলাম ৷ ওমনি অনু আমার হাতটা খপ করে ধরে টান মেরে বিছানার দিকে নিয়ে গেল ৷ আমার শরীরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে তার গায়ের উপর এলিয়ে পড়লাম ৷ অনুর হাতটা হ্যাচকা টান মেরে বিছানা থেকে উঠলাম ৷ অনু আমার এহেন আচরণে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে রইলো ৷ রাগে ফোঁসফোঁস তো করছিল আবার কাঁপছিলও ৷ কাঁপনের ফলে তার ঠোঁটও থরথর করে কাঁপছিল ৷ আচমকা সে ডুকরে কাঁদতে লাগলো ৷ বিছানা থেকে উঠে রুম থেকে বের হয়ে যেতে লাগলো ৷ তার হাতটা ধরতে গেলে হ্যাচকা টান মেরে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল!
নিজের উপরই রাগ হচ্ছিল ৷ ভুলটা আমারই ছিল ৷ লুডু খেলায় কোনো শর্ত বা বাজির সিস্টেম না রাখলে হয়তো এমনটা হতোনা ৷ অনুও কষ্ট পেতোনা!
.
লজ্জায় অনুর সামনে দাঁড়াতে পারছিনা ৷ বিশ্রী কাজ করতে যাচ্ছিলাম!
দুপুর পর অনুকে দেখলাম আম্মুর চুলে তেল লাগিয়ে দিচ্ছিল ৷ আমাকে দেখে অনু চেঁচানো স্বরে বলল,
----বুঝছো আন্টি, তোমার ছেলে আসলেই বোকা ৷ তবে বোকা হলেও চরিত্র ঠিকঠাক আছে!
.
অনুর এই কথা শুনে বুঝতে পারলাম সে আমাকে তখন পরীক্ষা নিয়েছিল ৷ ভাগ্যিস নিজেকে শুধরে নিয়েছিলাম ৷ অন্যথায় আজকে অনুর নিকট আমার চরিত্রের চৌদ্ধটা বেজে যেতো ৷
.
অনুর কথা শুনে আম্মুও বলল,
----নীল ওর বাবার মত ৷ মানুষটা দেখতে সুদর্শন না হলেও আচার ব্যবহার ও চরিত্রে কেউ দোষ ধরতে পারবেনা ৷ আমি নীলকে নিয়ে গর্ব করি!
.
অনু ফের নরম কন্ঠে বলল,
----আন্টি, আমি নীলকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই ৷ কিন্তু সেটা হয়তো সম্ভব না ৷ কেন সম্ভব না সেটা সময়ই বলে দিবে ৷ তাছাড়া আমার ভাই নীলকে কখনোই পছন্দ করতোনা ৷ এখনো নীলের নাম শুনলে রেগে যায় ৷ কিসের জন্য সে এমনটা করে জানিনা ৷ নীলের সাথে যে তার শত্রুতা আছে এমনটাও তো না ৷ ভাই কখনো চাইবেনা আমাকে নীলের হাতে তুলে দিতে ৷ আসলে আমি যেটা চাই সেই জিনিসটা সবসময় অধরাতে থেকে যায়!
.
অনুর কথা সত্য ৷ তার ভাই অমিত আমাকে একটুও দেখতে পারেনা ৷ যখন আমি ক্লাস ৯ পড়ি তখন থেকে সে আমার সাথে বাজে আচরণ করতো ৷ প্রায় দিনই সে আমার সাথে বিনাকারণে ঝগড়া করতো ৷ মারামারি লাগিয়ে দিতো ৷ আজও এর কারণ জানিনা ৷ তবে ৮ বছরের মধ্যে অমিতের সাথে কোনো কথা না হলেও ভাবীর সাথে ফোনে কথা বলে জানতে পেরেছি সে এখনো আমার নাম শুনতে পারেনা ৷ অথচ অমিতকে আমি নিজের ভাইয়ের মত করে শ্রদ্ধা করি!
.
আম্মু অনুর দিকে ঘুরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ৷ অতঃপর মিষ্টি করে হাসলো ৷ অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
----আমি কথা দিচ্ছি, তুই ই হবি আমার ছেলের বউ ৷ যেভাবে হোক আমি আমার চাওয়া পূর্ণ করবো ৷ এটাই আমার শেষ চাওয়া!
-----কিন্তু আন্টি, আমি আর স্বার্থপর হতে পারবোনা ৷ অনেক হয়েছে ৷ স্বার্থপরের মত কাজ করে কোনো কিছু লাভ করে সুখ পাওয়া যায়না ৷
-----কি বলছিস এসব? তোর কথার কিছুই বুঝতে পারছিনা? তুই কি এমন স্বার্থপরের মত কাজ করলি?
----সেটা আমি এখনই বলতে পারবোনা আন্টি!
-----ঠিকআছে ৷ তবে তোকে সান্ত্বনা দিয়ে নয় জোর গলায় বলছি তুই ই হবি আমার ছেলের বউ! বুঝছিস? এবার আয় আমি তোর মাথায় তেল লাগিয়ে দিই!
.
অনুর কথায় নিজেই বড়সর রহস্যের জালে আটকে গেলাম ৷ অনু কি এমন স্বার্থপরের মত কাজ করলো? এ কথার মানে কি?
.
বিকেলে আমার মেয়ে বন্ধু নীলা বাসায় এলো ৷ ও আমার সাথে খুবই ক্লোজড বলা চলে ৷ আমরা দুজনে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে নিই ৷ তবে আমাদের আড্ডা, মাস্তি সব বাইরে হয় ৷ বাসায় না ৷ আজকে প্রথমবার সে আমার বাসায় এলো ৷ ড্রয়িংরুমে বসে আম্মুর সাথে কথা বলছিলাম, অনুও পাশে ছিল ৷ আচমকা দরজায় কলিং বেল বাজলে দরজা খুলতেই দেখি নীলা দাঁড়ানো ৷ আমাকে দেখামাত্র সে আলতো ভাবে বুকে জড়িয়ে নিলো ৷ ভরকে গেলাম ৷ নীলা এমনটা করবে ভাবিনি ৷ নিশ্চয় অনু বিষয়টাকে ভালভাবে নিবেনা ৷ নীলা জড়িয়ে ধরা অবস্থায় উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
----কেমন আছো তুমি? অনেক দিন পর তোমাকে দেখলাম ৷ খুব ভাললাগছে এখন ৷ আমার কথা কি তোমার মনে পড়েনা বলো?
.
নীলা এরপূর্বে কখনো তুই ছাড়া সম্বোধন করে কথা বলেনি অথচ আজ সে তুমি তুমি করে বলছে ৷ এর পিছে ঠিক কি কারণ রয়েছে ধরতে পারছিনা? তবে আমার যে সর্বনাশ হতে চলছে এটা নিশ্চিত ৷ নীলার কোন কথার জবাব দিলাম না ৷ চেহারা ঘুরিয়ে অনুর দিকে নজর দিয়ে দেখি সে রাগে হিংস্র বাঘিনীর রুপ নিয়ে শিকারির চোখে আমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে ৷ কাম সেরেছে! এ মুখ আর অনুকে দেখানো যাবেনা ৷ আমার চরিত্র নিয়ে আম্মু যে সার্টিফিকেট দিয়েছিল তার সাথে অনুও সম্মতি জানিয়েছিল সেই সার্টিফিকেট দিয়ে এখন ভাঙ্গারি দোকান থেকে ছনপাপড়ী কিনে খাওয়া যাবে, অন্যথায় ঐ সার্টিফিকিটের দু-পয়সার দাম নেই ৷ আমার মাথায় হাত, জিহ্বায় কামড় ৷ হায় মাতাল হায় মাতাল অবস্থা আমার ৷ সঙ্কোসবোধ করে নীলার শরীর থেকে সরে যাবার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু সে এমনভাবে জড়িয়ে ধরে আছে যে যদি সে নিজ থেকে আমাকে না ছাড়ে তবে ছাড়া পাওয়া সম্ভব না ৷ হ্যাচকা টান মেরে সরে যেতে হবে, কিন্তু এটা করলে নীলা কষ্ট পাবে ৷ তাই এটা করা যাবেনা ৷ আমি নীলার থেকে সরে যাবার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, এটা দেখে সে তোরজোর কন্ঠে বলল,
---আরে এমন করছো কেন? এতদিন পর একটু জড়িয়ে ধরলাম তোমাকে আর এমন আচরণ করছো? তুমি পরিবর্তন হয়ে গেছো!
.
ফিসফিস করে নীলাকে বললাম,
----আম্মু বসে আছে, ছাড়ো আমাকে ৷
.
কথাটা শুনে তবেই নীলা আমাকে ছেড়ে দিলো ৷
.
নিরিহ বিড়ালের মত ভর্য়াত মন ও অচল দেহ নিয়ে অনুর দিকে অপরাধীর চোখে তাকালাম ৷ সে অমনি সোফা থেকে উঠে ক্ষুধার্ত বাঘিনীর রুপ নিয়ে কালনাগিনীর মত ফোঁসফোঁস করতে করতে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
----আন্টি, আপনার চরিত্রবান ছেলের জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে তাকে আমার রুমে আসতে বলুন!
.
অনু রাগে ছটফট করতে করতে থমথমে পায়ে চলে গেল তার রুমে ৷ আমি কপাল চাপড়াচ্ছিলাম আর নিজেকে ভৎর্সনা করছিলাম ৷
নীলা অনুকে দেখে কৌতূহলের চোখে তাকালো ৷ আমাকে জিজ্ঞেসা করলো,
----মেয়েটা কে?
.
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,
----আমার প্রেমিকা!
.
নীলা চেতে গেল ৷ উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে বলল,
----কিহ? তুই প্রেম করছিস আমি জানিনা? এটা কিছু হলো? তোর থেকে এমনটা আশা করিনি ৷
----তুই তুই করে যদি তখন কথা বলতে তাহলে কতই না ভালো হতো ৷ শুধু শুধু অনুর মধ্যে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিলে ৷
----এই তুই না আমাকে ভালোবাসতি? তাহলে এই মেয়ে কোত্থেকে এলো?
----ফাইজলামী করো না তো ৷ এমনিতেই আম্মুর চোখে বাজে ছেলে হয়ে গেছি ৷
.
আম্মু চেঁচিয়ে উঠে বলল,
----হুহ, এখন তোর ভাল মানষ সাজার কোনো দরকার নেই ৷ তোরে চিনে নিয়েছি ৷ অনুর রুমে যা, সে কি বলে শুনে আস!
.
অনুর রুমে যেতে প্রচন্ড ভয় করছিল ৷ কি না কি করে? রাগের মাথায় আমার মাথার চুলও ছিঁড়তে পারে ৷ তবুও ভয় ভয় মনে ধীর পায়ে অনুর রুমের দিকে চললাম ৷ দরজার সামনে অনু চোখ মুখ লাল বানিয়ে গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ৷ তার কাছে বিড়াল ছানার মত নিরিহ নিরিহ ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম ৷ সে আমার হাতটা খপ করে ধরা মাত্র মনে হলো প্রাণটা এ দেহে নাই, তার হস্তে চলে গেছে ৷ টেনে রুমের ভেতর নিয়ে গেল ৷ দরজাটা বন্ধ করে দিলো ৷ অতঃপর আমাকে বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো ৷ আজ আর রক্ষা নেই ৷ এই বুঝি তার হস্তে নিজের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে ৷ আমার গায়ের উপর চড়ে আমার ঠোঁট শক্ত করে ধরে ক্ষ্যাপাস্বরে বলল,
----এত মেয়েদের প্রতি লোভ কেন তোর? কয়টা মেয়ের সাথে লটরপটর তোর? বল, সত্যি সত্যি বলবি, একটাও যদি মিথ্যা বলিস তাইলে তোর চোখ আর ঠোঁট তুলে ফেলবো!
.
অনুর কথা শুনে গলা শুকে কাঠ হয়ে গেল ৷ তৃষ্ণা লেগে গেল ৷ পানি হলে ভাল হতো ৷ ঢোক গিলে তাকে মিনমিন গলায় বললাম,
----বিশ্বাস করো চাচাতো বোন আমার, আমার জীবনের প্রথম প্রেম তুমিই, এছাড়া কোনো মেয়ের সাথে কিচ্ছু নাই ৷ সত্যি বলছি!
.
কথাটা শুনে অনু আমার ঠোঁটে এমনভাবে চাপ লাগালো যে ব্যথায় আউচচচচ করে উঠলাম ৷ অনু ফের রাগমাখা কন্ঠে বলল,
----আমার কাছে মিথ্যা কথা বলবি তো পিঠের একটা চামড়াও রাখবোনা ৷ মিথ্যুক কোথাকার, ড্রয়িংরুমে রোমান্স করলি ওটা কে হয় তোর? তোর এমন কাজের জন্য তো বলতে হয় তুই একটা বারোভাতারি, সরি লুচ্চা!
----ছিঃ তুমি এটা বলতে পারলে? বিশ্বাস করো ঐ মেয়েটা আমার প্রেমিকা ট্রেমিকা কিছু না ৷ ও আমার বন্ধু মাত্র ৷
----বন্ধুর সাথে কেউ এমনটা করে? রসায়ন দেখে তো মনে হলো কত জনমের প্রেম!
.
কথাটা বলেই অনু আমার শরীর থেকে উঠে গেল ৷ তার চোখে মুখে বিষন্নতা ৷ বিষাদের ছাঁপ জড়িয়ে আছে ৷ মুহূর্তে তার রাগী ভাবটা কেটে গেলো ৷ রুপ নিলো বিবর্ণ ও মলিন চেহারাতে ৷ কষ্ট পেয়েছে সে ৷ এটা ধরতে আমার বেগ পেতে হলোনা ৷ ভালবাসি যে তাকে, তার মনের অবস্থা বুঝবো না এটা কি করে হয়? তার কষ্টের কারণটাও বুঝতে পারছি ৷ অনু মুখ লুকিয়ে নিঃশব্দে কাঁদছে ৷ হাতের তালু দিয়ে ঝরতে থাকা কয়েক ফোঁটা চোখের জল মুছে ফেললো ৷ কিন্তু এরপরও পুনরায় দু ফোঁটা অশ্রুজল টপটপ করে তার শাড়ির আঁচলে পড়লো ৷ পিছন থেকে ঝাঁপটে ধরে অপরাধীর কন্ঠে অনুতপ্ত হয়ে বললাম,
----এই প্রমিজ করলাম, আজ থেকে সমস্ত মেয়ে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিবো ৷ তুমি যাতে কষ্ট পাও এমন কাজ ভুলেও করবোনা!
.
অনু চাপা কান্নার স্বরে ভাঙ্গা গলায় বলল,
----ছাড়েন, অস্বস্তি লাগছে; ছাড়েন ৷
.
অনুকে ছেড়ে দিলাম ৷ সে ফের তীক্ষ্ণকন্ঠে বলল,
----আপনি রুম থেকে চলে যান ৷ আমি বারবার ভুল করছি ৷ নির্লজ্জের মত আপনার দ্বারেদ্বারে ঠোকর মারছি ৷ আর এমন নির্লজ্জতা দেখাবোনা ৷ চলে যান দয়া করে!
.
চলে যাওয়ায় বেটার হবে ৷ অনুর রুম থেকে বের হয়ে আমার রুমে ঢুকলাম ৷ দেখি নীলা রুমে বসে আছে ৷ আমি রুমে ঢুকতেই সে উঁচু গলায় বলল,
----আসছো তুমি? বসো এখানে ৷ তোমার সাথে অনেক দিন হলো মন খুলে কথা বলিনা, আজকে বলবো!
.
কথাটি হয়তো অনুর কানে পৌঁছেছে ৷ শব্দ করে অনুর কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম ৷ মাথাটা নষ্ট হয়ে গেল আমার ৷ নীলার জন্য আমি যেন বড়সর ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছি ৷ রাগের উদয় হলো আমার ৷ নীলাকে রাগান্বিত স্বরে বললাম,
---চুপ করো তো! বাসায় আসার পর থেকে ফাইজলামী করেই যাচ্ছো ৷ চুপ থাকতে পারোনা? এমনিতেই যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি ৷ তার উপর তোমার ঝামেলা ৷ প্লিজ, তুমি চলে যাও!
.
কথাটি বলে চুপ হয়ে গেলাম ৷ নীলা বোধহয় ভয় পেয়েছে আমার কথা শুনে ৷ কষ্টও পেয়েছে ৷ মুখ এতটুকু বানিয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলো সে ৷ আচমকা অনু রুমের ভেতর ঢুকে আমার শার্টের কলার ধরে আঙ্গুল দেখিয়ে রাগের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে ক্ষিপ্তস্বরে বলল,
----ওর সাথে এমন বাজে আচরণ করছেন কেন? আপনার কি ভদ্রতা জ্ঞানটুকুও নেই? সরি বলেন ওকে!
.
নীলাকে সরি বললে সে রুম থেকে বের হয়ে গেল ৷ অনু আমার মুখের দিকে রাগী চেহারায় তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ ৷ অতঃপর রুম থেকে চলে গেল!
.
হঠাৎ নীলার ম্যাসেজ ৷ সে এসএমএস করে লিখেছে,
---সরি রে, তোদের কষ্ট দিয়ে ফেললাম ৷ জানিস তো আমি এমনই ৷ একটু বেশিই মজা করে ফেলি ৷ তুই যে একজনের প্রেমে পড়েছিস সেটা আমি তুহিনের থেকে জেনেছি ৷ আজকে তোদের সাথে মজা করতেই বাসায় এসছিলাম ৷ তাছাড়া, আমার বিয়ের দাওয়াত দিতে আসছিলাম ৷ আন্টির কাছে কার্ডটা দিয়ে আসছি ৷ তোর হাতে দেবার সাহস হলোনা ৷ যদি অনু আবার সন্দেহ করে ফেলে, তখন আরেক সমস্যা হবে!
.
ইশ! কত বড় আহম্মকের মত কাজ করলাম ৷ নীলা আসলেই কষ্ট পেয়েছে ৷ সে যে মজা করছিল সেটা আমি বুঝতে পারলেও অনু বোঝেনি ৷ তার কষ্ট দেখে নীলার সাথে বাজে ব্যবহার করে ফেললাম!
নীলাকে সরি লিখে টেক্সট করলাম!
.
.
বিকেল থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত অনুর সাথে কোনো দেখা হলোনা ৷ সে হয়তো আমার উপর এখনো রেগে আছে ৷ তার কাছে যাবার সাহস হচ্ছেনা ৷ সরি বলতে হবে!
.
.
বিশাল মাঠের ঘাসের উপর অনু শুয়ে আছে ৷ বাহারী রঙের শাড়ি তার গায়ে জড়ানো ৷ আজকে তার চুলগুলো সিল্কি লাগছেনা, কোঁকড়ানো লাগছে ৷ হঠাৎ করে তার চুলগুলোর এমন পরিবর্তন কেমনে হলো বুঝতে পারছিনা ৷ অনুর বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি ৷ আর নিঝুম রাতের খোলা আকাশের জ্বলজ্বলে ধ্রুব তাঁরা ও পূর্নিমার চাঁদ মনজুড়ে অবলোকন করছি ৷ আকাশে মেঘের বিন্দুমাত্র পদচারণা নেই ৷ পরিষ্কার আকাশ ৷ প্রকৃতির ঈর্ষণীয় সৌন্দর্য অথচ অনুর মন ভাল হচ্ছেনা ৷ হঠাৎ করে তার মন খারাপ হবার কারণ আমার জানা নেই ৷ তার মন খারাপের কারণ জানতে চাচ্ছিনা ৷ ইচ্ছা করছেনা জানার ৷ অনু নিজে থেকেই আদুরে গলায় বলল,
----জানো আমার মন খারাপ কেন? কারণ, আজকে তুমি আমাকে একটাবারও কপালে চুমু দাওনি ৷ আমার মনে হচ্ছে তুমি দিনে দিনে আমার প্রতি ভালবাসা কমিয়ে দিচ্ছো!
.
অনুর অভিযোগ মিথ্যা নয় ৷ আসলেই তাকে চুমু দেওয়া হয়নি ৷ এখন যদি তাকে চুমু উপহার না দিই, তবে সে কথা বলা বন্ধ করে দিতে পারে!
অনুর ঠোঁটে আঙ্গুলের অগ্রভাগের ডগা দিয়ে আলতো ভাবে স্পর্শ করলাম ৷ অনু মৃদ্যুভাবে কেঁপে উঠলো ৷ ঈষৎভাবে তার কপালে হাতের তালুর পরশ বুলিয়ে দিলাম ৷ অতঃপর চকচকে ধারালো চাকু বের করলাম ৷ চাকুটা খুব ভালভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম ৷ একদম ধারালো ৷ ত্বকে লাগানো মাত্র একদম চিরেফেড়ে ধড় হয়ে যাবে ৷ মনের ভেতর পৈশাচিকতা এসে গেল কেন যেন ৷ রক্ত ঝরানোর প্রবল ইচ্ছা জাগছিল ৷ আমার মন না যতটা চাইছিল তারচেয়ে বেশি বাম হাতটা চায়ছিল হীরার মত চকচকে চাকুটা দিয়ে কারো দেহের রক্ত ঝরিয়ে বন্যার ন্যায় প্লাবিত করতে ৷ অকস্মাৎ, অনুর লাল টসটসে রসে টইটুম্বর ঠোঁটটাতে হালকাভাবে চাকু দিয়ে পোচ দিলাম ৷ সে যেন আক করে উঠলো ৷ এ কি করলাম আমি ৷ আমি কি বুঝে করলাম? ভাবতে না ভাবতে পুনরায় চাকুটা তার বুকের নিচের অংশে ঢুকিয়ে দিলাম ৷ চিৎকার মেরে উঠলো অনু ৷ আকাশ বাতাস যেন তার কান্নার প্রতিধ্বনীতে মিশে গেল ৷ হয়তো প্রকৃতির সবকিছুই অনুর সীমাহীন যন্ত্রণার বুকফাঁটা চিৎকার শুনে সমবেদনা জানাবে ৷ কিন্তু তার চিৎকার শুনে আমার হ্নদয়ে কেন যেন কোনো রকমের প্রভাব ফেললোনা!
.
এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম ৷ স্বপ্নের ইতি ঘটলো ৷ চতুর্থবারের মত ভয়ানক স্বপ্নের সম্মুখীন হলাম ৷ স্বপ্নগুলোর ব্যাখ্যা অন্তত আমার জানা নেই!
.
.
খুব ভোরে ঘুম থেকে জেগে অনুর রুমে ঢোকার ইচ্ছাপোষণ করলাম ৷ কিন্তু দরজায় হাত রেখে বুঝলাম অনু ঘুম থেকে জাগেনি এবং দরজাটাও বন্ধ করে রেখেছে সে ৷ কিন্তু পরেরবার যখন দরজাটাতে জোরে ধাক্কা মারলাম, ওমনি খুলে গেল ৷ কিছুটা ফাঁক হয়ে গেল ৷ দরজা দিয়ে রুমের ভেতর নজর দিয়ে দেখি অনু আয়নার সামনে বসে আছে ৷ কিন্তু হায়! এটা তো সেই অনু ২ ৷ যাকে আমি ভ্রম হিসেবে জানি ৷ কিন্তু সে তো মুখে মেকআপ লাগানোর চেষ্টা করছে ৷ প্রথমেই মুখটা পানি দিয়ে হালকাভাবে ধুয়ে নিলো দেখলাম ৷ অতঃপর মুখে মেকআপ করার যত রকমের ফর্মূলা রয়েছে তা একের পর এক মুখে লাগাতে লাগলো ৷ ৩২ মিনিটের মধ্যে আমার চোখের সামনে শ্যামবর্ণের রাহনুমাকে দেখতে পেলাম ৷ হতভম্ব আমি ৷ এটা কি দেখলাম? এটা কি সত্যি? নাকি ভ্রম? মেকআপের মাধ্যমে চেহারার এমন পরিবর্তন কেমনে আনলো সে? কি টাইপের মেকআপ? এতদিন তাহলে অনু আমাকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছিল? কিন্তু কেন? কি পেলো সে এসব করে?
.
No comments