Header Ads

Header ADS

ভালোবাসায়_বেধে_রেখো💞 পর্বঃ০৭

 ওরা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে ফুটপাত ধরে হাটতে লাগলো।দুজনের মধ্যেই নিরবতা। একটু পর তাহমিরা নিরবতা ভেঙে বলতে শুরু করলো

"ত্রিশাদ তারিনের কথায় কষ্ট পেয়েছো?"
"না না কষ্ট পাই নি।"
"আমার কিন্তু তোমার চেহারা দেখে তা মনে হচ্ছে না। দেখো একজনের জন্য আরেকজনে জীবন থেমে থাকে না।ওকে ভোলার চেষ্টা করো।পরিবারের সময় দাও বন্ধুদের সাথে কথা বলো মোটকথা কোনো কাজে ব্যাস্ত থাকো।"
"চেষ্টা করবো কিন্তু আদৌ পারবো কি না জানি না।"
"ত্রিশাদ আমি তোমার ছোট তবুও বলছি হাল ছেড়ো না হতাশ হয়ে যেয়ো না।"
তাহমিরা ত্রিশাদকে নানারকম ভাবে বোঝাচ্ছে।হঠাৎ একটা রিকশা এসে ত্রিশাদের দিকে আসতেই তাহমিরা ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।তারপর কাছে এসে বলল
"ব্যাথা পেয়েছো?"
"না ঠিক আছি।"
তাহমিরা একটা রিকশা ডাক দিয়ে ত্রিশাদকে নিয়ে রিকশায় উঠে পড়লো।তারপর সামনের একটা পার্কের সামনে থামলো।তাহমিরা ত্রিশাদকে একটা বেঞ্চে বসিয়ে বাদাম কিনতে গেছে।তাহমিরা ফিরে আসার পথে একটা বছর ছয়েক এর বাচ্চা তাহমিরার জামা ধরে বলল
"আন্টি আমাকে বাদাম দাও
তাহমিরা হেসে ফেললো তারপর ওর কাছে হাটু গেড়ে ওকে বাদামের পেকেট টা দিয়ে বলল
"বাবু তোমার নাম কি?"
"উর্মি।তোমার? "
"তাহমিরা।"
তারপর বাচ্চাটা কৌতুহলী দৃষ্টিতে ত্রিশাদকে দেখিয়ে বলল
"ওটা কি আঙ্কেল?"
"হুম।"
এর মধ্যেই বাচ্চাটার মা দৌড়ে এসে ওর হাত ধরে বলল
"এতো ছুটাছুটি করো কেনো?তোমার জন্য একটু শান্তিও পাই না।"
বাচ্চাটা কাঁদো কাঁদো ফেস করে তাহমিরার দিকে তাকিয়ে আছে।তাহমিরা বাচ্চাটার মায়ের দিকে তাকিয়ে সৌজন্যমূলক হেসে বলল
"আপু ও তো ছোট মানুষ বকা দিয়েন না।"
ওর মা বলল
"অনেক দুষ্টামি করে।"
"এখন একটু করবেই ছোট তো।"
বাচ্চাটার মা ত্রিশাদকে দেখিয়ে বলল
"মাশাল্লাহ আপনার স্বামীতো খুব সুন্দর তা বাচ্চা কাচ্চা আছে আপনার? "
তাহমিরা কিছু বলার আগেই ত্রিশাদ তাহমিরাকে ডাক দিলো তাই ও আর কিছু বলার সুযোগ পেলো না কোনরকম বিদায় নিয়ে চলে এলো।কিন্তু তখনও তাহমিরার মাথায় মহিলাটার কথা বাজছে।মহিলাটা ত্রিশাদকে ওর স্বামী বলল।তাহমিরা ত্রিশাদের কাছে এসে বলল
"চলো যাওয়া যাক। বাদাম কিনেছিলাম কিন্তু একটা বাচ্চাকে দিয়ে দিয়েছি।"
"ওহ!আচ্ছা চলো।তুমি বাসায় ফিরবে কখন?"
"এইতো তোমাকে এখন বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে আমি বাসায় যাবো।"
"ও বিকেলে আসবে?"
"হ্যাঁ ইশিতাকে পড়াতে তো আসবই।"
"আচ্ছা। "
তারপর ত্রিশাদকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে তাহমিরাও বাসায় চলে গেলো।রুমে গিয়েই শাওয়ার নিতে চলে গেলো।
ঝর্ণার নিচে দাড়িয়ে তাহমিরা একমনে মহিলার কথাগুলো ভাবছে।কি বলল মহিলাটা ত্রিশাদ ওর স্বামী!!এটা কিভাবে সম্ভব। এমন না যে ত্রিশাদকে ওর পছন্দ না কিন্তু ওকে যদি ভালোবাসে তাহলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হবে প্রথমেতো ত্রিশাদ চোখে দেখে না তার ওপর ও বেকার বাবা মা কিছুতেই মেনে নেবে না।আর তাহমিরা বাবা মা কে কিছুতেই কষ্ট দিতে পারবে না।তাই মাথা থেকে হাবিজাবি চিন্তা বাদ দিয়ে একটা গান ধরলো।গোসল করে বেরিয়ে দেখে ওর চাচাতো বোন রিফা বসে আছে।দৌড়ে রিফাকে জড়িয়ে ধরে বলে
"কেমন আছো আপু?"
"আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই?"
"আমিও ভালো আছি।তা দুম করে কোথা থেকে উদয় হলে?"
"বলছি আগে তুই বল প্রেমে টেমে পড়েছিস নাকি?"
তাহমিরা ভ্রু কুচকে বলল
"আমি আবার প্রেম নো ওয়ে।"
"না বাথরুমে যে ভাবে গান গাইছিলি তাই ভাবলাম আরকি।যাক শোন এক সপ্তাহ পর আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে রিয়ানের সাথে তাই তোকে আজকে নিতে এলাম তোকে আমার সাথে যেতে হবে।"
"ওহ!!আচ্ছা কখন যাবে?"
"সন্ধ্যার সময়।তোর কি এখন কোনো কাজ আছে?"
"হ্যাঁ একজনকে পড়াতে যেতে হবে।"
"ও তাহলে পড়িয়ে আয় আমি আর চাচি মিলে তোর ব্যাগ প্যাক করি।"
"আচ্ছা। "
তারপর তাহমিরা ইশিতাকে পড়াতে চলে গেলো।ওকে পড়িয়ে ত্রিশাদের রুমে গিয়ে দেখে ও শুয়ে আছে চোখ বন্ধ তাই চলে আসতে নিলেই ত্রিশাদ বলে ওঠে
"তাহমিরা কিছু বলবে?"
"ওহ!!তুমি জেগে ছিলে?"
"হ্যাঁ, আসো বসো।"
তাহমিরা বসতে বসতে বলল
"আমি দশ দিনের জন্য ইশিতাকে পড়াতে আসতে পারবো না।"
"কেনো?"
"আমার চাচাতো বোন রিফার বিয়ে তাই কুমিল্লায় যেতে হবে।"
"ওহ!!আচ্ছা ফোনে তো কথা হবেই।"
"না হবে না।"
ত্রিশাদ ভ্রু কুচকে বলল
"কেনো?"
"যেখানে যাচ্ছি সেখানে এক বিন্দু ও নেটওয়ার্ক নেই।"
"ও তাহলে দশদিন পরই কথা হবে।"
"হুম সেটাই। "
তারপর ত্রিশাদ তারিফ আর ইশিতার সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে তাহমিরা বেরিয়ে পড়লো বাসার উদ্দেশ্যে।বাসায় এসে দেখে ওর ব্যাগ প্যাক করা শেষ। তাই এখনই দুই বোন রওনা হবে।আর তাহমিরার বাবা মা বিয়ের দুদিন আগে আসবেন।মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে তাহমিরা আর রিফা ট্রেনে উঠে পড়লো।একটা কামরা পুরোটাই নিয়ে নিলো ওরা।
এক সপ্তাহ যেনো কাটতেই চাইছে না।কুমিল্লায় এসেছে আজ পাঁচ দিন আজ গায়ে হলুদ রিফার।তাই রিফাকে সাজিয়ে স্টেজে নেওয়া হলো।সবাই মজা করছে কিন্তু তাহমিরা পারছে না মনটা আনচান আনচান করছে ত্রিশাদের সাথে দেখা করার জন্য এটা কি ভালোবাসা না কি মোহ!!এই কয়টা দিন আসার পর থেকে মনটা খালি ত্রিশাদ ত্রিশাদ করছে।মুখটা বারবার ভেসে উঠছে।তাহমিরা ভাবে এতো অল্প দিনেও কি কাউকে ভালোবাসা যায়?
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হলো রাত ১.০০ টায়।গ্রাম বলে তাড়াতাড়িই শেষ হলো।তাও অনেক রাত হয়েছে। রিফা তার ঘরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। হঠাৎ তাহমিরা পিছন থেকে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে
"কি করছো আপু?"
"এইতো ঘুমাবো।"
"আপু একটা কথা জিগ্যেস করি?"
"এতে অনুমতি নেওয়ার কি আছে?"
"আচ্ছা আপু কাউকে কয়েকদিনেই কি ভালোবাসা যায়?"
"তাহু তোর কি হয়েছে রে কারো প্রেমে পড়লি নাকি?"
"উহু, যা জিগ্যেস করছি তার উত্তর দাও।"
"আচ্ছা শোন,ভালোবাসা কয়েকদিনে নয় এক দেখাতেও হয়ে যায়।মোটকথা কখন, কোথায়,কিভাবে হবে তুই নিজেও বুঝতে পারবি না।আর যখন বুজতে পারবি তখন তুই ভালোবাসার পুকুরে হাবুডুবু খাবি উঠতে পারবি না।ওই যে একটা গান মনে নেই?"
"কোন গান?"
“Dil kya kare jab kisi se,
kisi ko pyaar ho jaaye..
Jaane kaha kab kisi ko,
kisi se pyaar ho jaaye
Unchi unchi diwaaron si,
is duniya ki rasmein
Na kuchh tere bas mein julie,
na kuchh mere bas mein
Dil kya kare jab kisi se,
kisi ko pyaar ho jaaye
Jaane kahan kab kisi ko,
kisi se pyaar ho jaaye
Jaise parbat pe,
ghata jhukati hai
Jaise saagar se lehar uthati hai
Aise kisi chehare pe nigaah rukati hai (2)
Ho rok nahi sakati nazaron ko
duniya bhar ki rasmein
Ohh Na kuchh tere bas mein julie,
na kuchh mere bas mein
Dil kya kare jab kisi se,
kisi ko pyaar ho jaaye
Jaane kaha kab kisi ko,
kisi se pyaar ho jaaye
Oh Unchi unchi diwaaron si,
is duniya ki rasmein
Na kuchh tere bas mein julie,
na kuchh mere bas mein
Dil kya kare jab kisi se,
kisi ko pyaar ho jaaye
Jaane kaha kab kisi ko,
kisi se pyaar ho jaaye”
এই গানটা আমার অনেক পছন্দের। আর রিয়ানকে আমি প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলি। লাভ এট ফার্স্ট সাইট যাকে বলে আচ্ছা যা এখন ঘুমা।"
"আচ্ছা আপু।"
এই বলে তাহমিরা নিজের রুমে চলে গেলো।তাহমিরা বিছানায় বসে বসে ভাবতে লাগলো তার মানে ও ত্রিশাদকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু ওকে বলবে কিভাবে? ওতো এখনো তারিনকে ভালোবাসে আর তাহমিরাকে তো বন্ধু হিসেবে ভাবে।তাহমিরা কি করবে?......

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.