Header Ads

Header ADS

নিয়তি( এ কেমন ভালবাসা)----পর্বঃ ১৩


সেদিন ওই শরীর নিয়ে শামীম কাজ করে কিন্তু চাঁদ বার বার বাধা দেয় কাজ করার জন্য। শামীম চাঁদের কথা না শুনে তার নিজের কাজ নিজেই করতে থাকে। চাঁদের কথা যখন শামীম না শুনে তখন রাগ হয়ে শামীম কে কাজের জায়গা থেকে টেনে নিয়ে বাইরে আসে। বাইরে এসে চাঁদ তার ওড়না দিয়ে শামীমের কপালের ঘাম মুছে দেয়।
চাঁদঃ শোন আমার কথা যদি না শুনিস তো তোর অবস্হা আরো খারাপ করে দিবো বলে দিলাম।
শামীমঃ তোর কথা শুনে চললে কি আমার পেঠে ভাত যাবে তৃপ্তি পুতুল সোহাগী এদের পড়াশোনা খাওয়ার টাকা কে দিবে?
চাঁদঃ নিজের কথা কি কখনও ভাববি না তুই?
শামীমঃ কে বলে নিজের কথা ভাবি না? নিজের কথা ভাবি দেখেই তো আজো কত সুন্দর করে বেঁচে আছি।
চাঁদঃ এটা কে সুন্দর করে বেঁচে থাকা বলে, এর চেয়ে তো রাস্তার মানুষও ভালো করে থাকে।
শামীমঃ চাঁদ তুই কি আমার বলা সব কথা ভুলে গেছিস? দেখ চাঁদ আমার আগের জীবনের চেয়ে এই জীবন টা অনেক ভালো। এখানে বাবা মা ভাই বোন তুই বাদল ননী গোপাল তৃপ্তি পুতুল সোহাগী এখানে যারা কাজ করে তারা সবাই আমাকে ভালোবাসে।
চাঁদঃ শুধু তোর বাবা মা ভাইবোন বাদে বাকি সবাই।
শামীমঃ বাদ দে এসব কথা এখন বল এখানে থাকলে কি ওদের পড়াশোনা খাওয়ার টাকা দিতে পারবো?
চাঁদঃ আমি দিবো তবুও তুই এখানে বসে থাক।
শামীমঃ আমার জন্য তুই কেনো ওদের কে টাকা দিবি? আর তোর তো নিজের পরিবার আছে তাই না?
এবার চাঁদ শামীমের কাছ থেকে উঠে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে মুচকি হাসতে লাগলো। তারপর বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে শামীমের কাছে ফিরে এসে।
চাঁদঃ তোর মত আমিও এতিম, তোর মত আমারো বাবা মা কেউ নাই। তবুও তো তুই তোর বাবা মা কে অলৌকিক ভাবে পেয়ে গেছিস আমার তো সেটাও নাই।
শামীমঃ কি বলিস তুই? তাহলে কোথায় কার কাছে থাকিস তুই?
চাঁদঃ আমার ধর্ম কি আমি নিজেও জানি না, সিলেটের এক পাহাড়ে নাকি আমাকে একজন পায়। তিনি আমাকে সেখানকার একটা এতিম খানায় রাখে। যখন আমার বয়স ৯ বছর তখন সেই এতিমখানার এক শিক্ষক গভির রাতে তার রুমে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার সাথে খারাপ কাজ করতে চায়। কিন্তু শামীম বিশ্বাস করো তাকে আমি বাবার মত জানতাম কিন্তু তিনিই আমার সাথে এসব করার জন্য উঠে পরে লাগে আমি তার শক্তির কাছে প্রায় হার মানতে ধরেছিলাম। আমার ভাগ্য ভালো ছিলো বলে সে যাত্রায় বেঁচে যাই ফজরের আযানের কারণে। এরপর প্রায় আমার সাথে জোর করা ধস্তাধস্তি করা শুরু করত যখন কেউ থাকত না। একদিন আমি এতিমখানার সুপার কে বিচার দেই, তিনি বিচারও করেন কিন্তু এতে যেনো সেই শিক্ষক আমার উপর আরো রেগে যায়। তাই একদিন আমাকে মনে করে আমার পাশে যে আমার মত আর একটা মেয়ে থাকত তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে(কাঁদতে লাগল)
চাঁদ আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্য টা দেখতে থাকল আর কাঁদতে লাগলো। শামীম চাঁদের পিঠে হাত দিয়ে
শামীমঃ তারপর কি হলো চাঁদ( অনেক আগ্রহ নিয়ে)
চাঁদঃ সেদিন বিকালেই এক কাপড়ে সেখান থেকে চুপি সারে পালিয়ে আসি। তারপর সিলেটে এক বাসায় কাজের মেয়ের কাজ নেই। সেখানে প্রথম দিকে দিন গুলো ভালোই যেতে লাগল। যখন আমার বয়স ১৫ বছর তখন একদিন আমি গোসল করতেছিলাম সেই সময় যার বাসায় কাজ করি সেই তিনি দর্জার ফাক দিয়ে আমার ভেজা শরীর কুকুরের মত জিভ বের করে দেখতে থাকে অবশ্য শরীরে কাপড় ছিলো আমার। তার কিছুদিন পর রাতে যখন ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ অনুভব করলাম কে যেনো আমার গায়ের উপর শুয়ে আমাকে একহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরেছে আর এক হাত দিয়ে আমার জামা আর পাজামা খোলার চেষ্টা করতেছে। আমার যখন হুশ এলো ঘরের ডিম লাইটের আলোতে দেখতে পেলাম সেটা মালিকের ছেলে। অনেক কষ্টে তাকে সরিয়ে দিয়ে ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দেই। সে আমাকে হুমকি দেয় তার কথায় রাজি না হলে সে আমাকে তার টাকা চুরির দায়ে জেলে দিবে। আমি সেদিন রাতে সেই বাসা থেকে পালিয়ে যাই।
শামীমঃ তারপর এখানে আসো তাই তো?
চাঁদঃ না, তারপর একটা ছোট হোটেলে রান্না করার চাকরী নেই কিন্তু সেখানে খেতে আসা মানুষ গুলো আমার দিকে বাজে ভাবে তাকিয়ে থাকত আর দোকানের মালিক কে বলল এর ভাড়া কত। একদিন তো হোটেলের মালিক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে আমাকে বিক্রি করার কথাও বলেছিলো। সেটা শুনতে পাওয়ার পর আমি কোন রকমের এই ইট পাথরের শহরে আসি। এখানে এসেও পথে ঘাটে অনেক মানুষের লালসার স্বীকার হতে ধরে ছিলাম। একদিন বাদল দাদা আর ননী গোপাল আমাকে বাঁচিয়ে এখানে নিয়ে এসে চাকরি দেয়। আর এখানে কাজ করতে গিয়েও ডাক্তার আর ওয়ার্ড বয় এবং (ছেলে) নার্স আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়।
শামীমঃ আমার থেকেও দেখি তোর অনেক কষ্ট রে চাঁদ, এত কষ্ট বুকে চেপে রেখে তারপরও কেমন করে হাসি খুশি থাকিস।
চাঁদঃ আমি যে মেয়ে মানুষ। আচ্ছা শামীম আমার গায়ের চামড়া তো কালো তারপরও কেন মানুষ আমাকে তাদের বিছানা সঙ্গী করতে চায়? কৈ কেউ ভালো তো আর বাসতে চায় না। সবাই শুধু এই শরীর টা চায়, আচ্ছা শরীর ক্ষুদা টা বড় ক্ষুদা নাকি পেঠের ক্ষুদা?
শামীমঃ চাঁদ তুই কিন্তু কালো না শ্যামলা, আর তোর চেহারার মাঝে একটা আর্ট আছে যা যেকোন ছেলেকে পাগল করে দিতে পারে। দেখ আমি আজ প্রায় বছর খানেক ধরে এই শহরে এই হাসপাতালে আছি। মানুষ কেমন তা চিনে গেছি, যাদের জন্মের ঠিক নাই তারাই মেয়েদের কে পণ্য ভেবে বিছানায় নিতে চায়। যারা কখনও অভাবের মুখে পরে নাই তারাই শুধু দেহ খুজে সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে। আমরা গরীব আমরা জানি ক্ষুদার যন্ত্রণা কি?
চাঁদঃ মানুষের শরীরের চামড়া কি সারাজীবন এক থাকবে? রুপ যৌবন কি এক থাকবে? যে মানুষ গুলো এই সব কাজ করতে চায় তাদের ঘরেও তো মা বোন আছে তাদেরও তো সন্তান হবে যখন তাদের আপনজনের সাথে কেউ এমন করবে তখন। সেই ব্যক্তি গুলো কি সারাজীবন দুনিয়াতে বেঁচে থাকবে নাকি মরার ভয় কি নাই?
শামীমঃ চাঁদ যদি ভাবত তাহলে এমন কাজ কখনও করতো না। অনেক ছেলে মেয়েকে দেখি নায়ক নায়িকার মত করে বের হচ্ছে তাদের নামাজ সম্পর্কে বললে তারা কিছুই বলতে পারবে না। অতএব এসব বাদ দে চল কাজ করি।
চাঁদঃ চুপ করে এখানে থাক আমি স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে আসতেছি।
চাঁদ শামীম কে সেখানে রেখে স্যারের কাছে ছুটি নিতে গেলো। ছুটি নিয়ে আসার সময়
পাঠক ভাইয়েরা গল্পের নাম যে রকম সেরকম করেই গল্প লেখা হচ্ছে তাই দয়া করে কেউ মন মানুষিকতা নষ্ট করার মত কথা বলবেন না। যদি আমার গল্প আপনাদের পছন্দ না হয় তাহলে পড়বেন না তাতে আমার কোন সমস্যা নাই কিন্তু কেউ গল্প কে ফালতু খারাপ কিংবা এত কষ্ট হলে কি চলে তা বলবেন না। আপনাদের কে বুঝতে হবে গল্পের নাম কি তারপর দেখবেন মিল আছে কি না তারপর কথা বলেন?
বাদলঃ চাঁদ একমাত্র তুই পারবি শামীম কে শক্ত করতে তুই পারবি তাকে এই পৃথিবী টা চেনাতে।
ননী গোপালঃ চাঁদ এখানে আমরা যারা কাজ করি সবাই চাই তুই শামীম কে বিয়ে কর আর শামীম বোকা থেকে চালাক করে দে। কোন সমাজে মানুষ কেমন করে চলে কেমন করে কথা বলে কেমন করে উঠা বসা করে সব করে দিবি।
বাদলঃ তুই তো আর তাকে লেখাপড়া শেখাতে পারবি না তবে বাকি কাজ গুলো তো করতে পারবি।
চাঁদঃ দোয়া করো দাদা আমি যেনো সব করতে পারি।
বাদলঃ ভগবান তো মঙ্গল করবে চাঁদ।
সেখান থেকে চাঁদ আমাকে এক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরার পর চাঁদকে ওর বস্তি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে বাসা চলে যাই। গিয়ে দেখি ফয়সাল আর ওর বন্ধু গুলো বাসার ভিতরে মদ খাচ্ছে আর সাথে মুরগির আন ডিম চিপস এসব খাচ্ছে। কিন্তু এসবের কিছুই চিনে না শামীম আর বাসাতেও কেউ নাই। শামীম কে দেখে ফয়সালের মাথায় খারাপ বুদ্ধি চাপে তাই সে আর তার বন্ধুরা মিলে শামীম কে জোর করে মদ খাইয়ে দেয় আর সেই সময় ফয়সালের বোন দুলাভাই মাম্মি ড্যাডি সবাই আসে। এসে দেখে শামীমের হাতে বদের বোতল আর শামীমের পুরা শরীর থেকে মদের গন্ধ আসতেছে।
ফারিনঃ দেখ মা তোমার ছেলের কান্ড, যে বাসাতে জীবনে কেউ এ ধরনের কাজ করে নাই সেই বাসাতে তোমার গুনধর ছেলে ছিঃ। তোমার ঘরে আরো ছেলে মেয়ে আছে এর কারণে যদি তারাও এমন হয়?
সাহানাঃ ঠাস তোর কি একটুও আক্কেল জ্ঞান নাই, এতদিন অনেক কিছু করেছিস। অনেক আত্মীয় স্বজনের সাথে খারাপ ব্যবহার কারো সাথে ঠিক ভাব৷ কথাও বলতে পারিস নাই। সব সময় মুর্খের মত থাকতি আর আজ এসব কি? এতদিন মনে করেছিলাম তুই সত্যি বোকা তাই এমন করিস, কারো চলা কথা বলা সম্মান আদব কায়দা এসব জানিস তাই কোন বলি নাই কিন্তু আজ প্রমাণ করে দিলি রাস্তার কুকুর কখনও মানুষ হয় না। এই মুহুর্তে আমার বাসা থেকে চলে যাবি, আর শোন এ বাসার কেউ কখনও মরে গেলেও আসবি না বলে দিলাম।
শামীম ওর মায়ের কথা শুনে অবাক, শামীম এতদিন শুনেছে সন্তান যত বড় অপরাধ করুক না কেনো মা কখনও সন্তান কে তার কাছে চলে যেতে বলে না কিন্তু আজ তার উল্টো টা হলো। শামীম আর কাউকে কোন না বলে নিজের ঘরে গিয়ে তার প্রয়োজনীয় সব কিছু ব্যাগে ঢুকিয়ে কাউকে কোন না বলে শুধু তার ভাইবোন গুলোর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে সেখান থেকে চলে আসে আবার আগের জায়গায়। শামীম কে আবারো আগের জায়গায় দেখে বাদল ননী গোপাল খুব খুশি হয়েছে। পরেরদিন সবাই জানতে পারে আবারো শামীম এখানেই থাকবে আর সবাই এতে করে অনেক খুশি। যারা বয়স্ক পুরুষ আছে তারা সবাই শামীম কে বাবার ভালোবাসা দেওয়া শুরু করলো যারা বয়স্ক মহিলা আছে তারা শামীম কে মায়ের ভালোবাসা দেওয়া শুরু করে দিলো। আর চাঁদ শামীম কে কোথায় কিভাবে চলতে হবে কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে। নিজের মাঝে কিভাবে ভাব ধরে থাকতে হবে তা সব কিছুই শিখিয়ে দিয়েছে।
চাঁদঃ কি বস এখন কি আপনার মনে কোন কষ্ট আছে?
শামীমঃ যেখানে তোর মত ভালো একটা মেয়ে আছে সেখানে কষ্ট থাকতেই পারে না।
চাঁদঃ ওই চল না বিয়ে টা করে ফেলি?
শামীমঃ সব সময় তোর এসব কথা ভালো লাগে না।
চাঁদঃ বারে, আমার বুঝি ইচ্ছা করে না তোর ঘরের বউ হতে তোকে আদর করতে তোর সন্তানের মা হতে।
শামীমঃ ছি কি মেয়ে রে তুই এসব কথা কেউ এভাবে বলে তোর দেখি লাজ লজ্জা কিছুই নাই।
চাঁদঃ যাকে ভালোবাসি তার কাছেই বলেছি অন্য কাউকে তোর আর বলি নাই বস।
শামীমঃ আমি কি বলেছি তোকে আমি ভালোবাসি। আর আগে তো সালা বলতি এখন বস বলতেছিস কেনো?
চাঁদঃ ভালোবাসার কথা মুখ দিয়ে বলতে হয় না অনুভবে বুঝে নিতে হয়। আর আমি যেহেতু তোকে পরেছি সেহেতু এটাও জানি তুই আমাকে ভালোবাসিস কিন্তু মুখে বলতে চাচ্ছিস না। আগে তোকে পছন্দ করতাম তাই সালা বলতাম এখন তোকে বিয়ে করলে তুই হবি বাসার প্রধান তাই এখন থেকেই বস ডাকা অভ্যাস করতেছি।
শামীমঃ তোকে আমি করবো বিয়ে কখনওই না বুঝলি।
চাঁদঃ সেটা দেখা যাবে, যা এখন গিয়ে তোর কাজ কর।
শামীম ওর জায়গায় গিয়ে কাজ করতে থাকে আর এই সুযোগে চাঁদ সব কাজের লোক কে একখানে করে।
চাঁদঃ তোমরা তো সবাই জানো শামীম কে কতটা ভালোবাসি আমি, কিন্তু মে মানতে রাজি হচ্ছে না। তাই তোমাদের যাদের কে শামীম মা বাবা বলে ডাকে তারা শামীম কে যেভাবে পারো রাজি করাও বুঝলে।
বাদলঃ চাঁদ একদম ঠিক কথা বলেছে।
ননী গোপালঃ চাঁদ তোকে চিন্তা করতে হবে না কাকা কাকি রাজি করাবে শামীম কে। কি গো কাকি শামীম কে রাজি করাতে পারবে না
তোরা শুধু আজকে দেখবি কিভাবে রাজি করাই আর ননী গোপাল বাবা তুই একটু কষ্ট করে স্বপন স্যার কে ডেকে নিয়ে আর আর বাদল তুই আমার ছেলে টাকে।
ননী গোপাল গিয়ে ডাক্তার স্বপন কে আর বাদল শামীম কে ডেকে নিয়ে আসল।
শামীমঃ আজ সবাই হঠাৎ একখানে কেনো? কারো কি কোন সমস্যা হইছে নাকি?
তোর জন্য আজ এতকিছু হইছে
শামীমঃ মা আমি আবার কার কি করলাম বলবে তো নাকি?
তুই আমাকে মা বলে ডাকবি না, আমি যদি তোর নিজের মা হতাম তাহলে আমার কথা ঠিকি শুনতি।
শামীমঃ এটা কেমন কথা মা, আমি তো তোমার ার বাবার সব কথাই শুনি তাই না বাবা?
কোথায় আমার কথা শুনেছিস তুই কোন কথাই শুনিসনি।
শামীমঃ বলো কি করতে হবে আমাকে?
আগে তোর বাপের আর আমার গা ছুঁয়ে কথা দে আমরাযা বলবো তা শুনবি
শামীমঃ এই যে তোমাদের দুজনের গা ছুঁয়ে কথা দিলাম বলো এবার কি কাজ করতে হবে।
তোকে চাঁদ কে বিয়ে করতে হবে।
শামীমঃএবার হাসতে হাসতে বলতে লাগলো মা বাবা তোমরা দেখি চাঁদের মতই বোকা আমি নিজেও কখন কবে থেকে চাঁদ কে ভালোবাসা শুরু করেছি তা নিজেও জানি না। তবে এতটুকু জানি চাঁদ আমার সাথে যতক্ষণ ছিলো যতক্ষণ আমাকে ভালো মন্দ শিখিয়েছে ততক্ষণ মনে হত চাঁদ ছাড়া আমি আর চলতে পারবো না। চাঁদ যেভাবে আমার পাশে থেকেছে যে ভাবে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে তাতে করে আমি এমনিতেই চাঁদের উপর দুর্বল। আর চাঁদে সাথে থাকতে থাকতে আমি চাঁদ কে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। চাঁদ কখনোই আমাকে ছেড়ে যাবে না তার প্রমাণ অনেক আগেই পেয়ে গেছি।
তাহলে এতদিন বলিস নাই কেনো তুই চাঁদ
শামীমঃ আগে বললে তো সব মজাই শেষ হয়ে যায় মা। আর চাঁদ তুই না আমাকে পড়তে জানিস তাহলে এত কিছু করার কি দরকার।
চাঁদঃ তুই তো একবারের জন্য আমার দিকে ভালোবাসার নজরে থাকাস না। সব সময় সম্মানের চোখে তাকাস, তাহলে কেমন করে বুঝবো কবে থে ভালোবাসা শুরু করেছিস আমাকে। আর তোকে কতবার ভালোবাসি বলেছি তুই তুই তার উত্তরে জানি না বা পারবো না এটাই বলেছি।
শামীমঃ যাকে ভালোবাসি তাকে যদি প্রথমে সম্মান করতে না জানি তাহলে তার প্রতি সারাজীবন ভালোবাসা থাকবে কেমন করে। তোকে ভালোবাসার আগে তোকে প্রথমে আমি সম্মাান করি, আর তার বিনিময়ে তো তোর কাছ থেকে সত্যিকারের মন থেকে ভালোবসাটা পাবো। তখন তুই নিজেই আমাকে তোর মন প্রাণ উজার করে ভালোবাসবি বুঝলি।
চাঁদঃ এমনিতেও তোকে আমি মন প্রাণ উজার করেই ভালোবাসি। আর তোর মত ছেলেদের কে মেয়েরা ভালোবাসে বুঝলি। যে ছেলে মেয়েদের কে সম্মান দিতে জানে তাকেই তো মেয়েরা পছন্দ করে।
স্বপনঃ এখানে আরো অনেকে আছে কথা গুলো একটু দেখে শুনে বলো বুঝলে।
বাদলঃ চাঁদ এসব বলার আরো সময় পাবি এখন বল কবে তোরা বিয়ে করতে চাস?
চাঁদঃ আমার আজকে হলেই তো ভালো হয়।
ননী গোপালঃ তুই কি বলিস শামীম
শামীমঃ আমি এখন বিয়ে করতে চাইতেছি না। আরো কিছুদিন যাক হাতে বেশি করে টাকা পয়সা হোক নিজে একটা ভালো বাসা নেই তারপর।
চাঁদঃ আমি রাজি আমার কোন সমস্যা নাই। তবে আমাকে এখন থেকে বেশি বেশি করে ভালোবাসতে হবে।
শামীমঃ ঠিক আছে, আর তোমাকেও কিন্তু বেশি বেশি ভালোবাসতে হবে আমাকে।
চাঁদঃ তার আর বলতে হয় নাকি।
সেখান থেকে সবাই যে যার যার মত কাজে চলে গেলো। চাঁদ আমাকে আগের বেশি ভালোবাসে বেশি খেয়াল রাখে এখন তো দিনে রাতে প্রায় আমার কাছেই থাকে। শামীম কে তার নিজের হাত দিয়ে খাইয়ে দেয় শামীম কে নিয়ে মাঝে মাঝে ঘুরতে যায়। হয়তবা ধনী বড়লোকদের মত করে বের হতে পারে না, তবে সাধ্যের মত যা হয় তাই। তবে ধনী বড়লোকদের চেয়ে এদের ভালোবাসার বিশ্বাস আছে এরা তাদের ভালোবাসাকে সম্মান করে পবিত্র রেখেছে। শামীম প্রায় সময় অন্য ব্যক্তিদের কাজে সাহায্য দুপুরে খাবার সময় শামীম সব বযস্ক পুরুষ মহিলা খাইয়ে দেয় যাদের কে মা বাবা বলে ডাকে তারা ব্যতিত। শামীম প্রতিমাসে পুতুল সোহাগী তৃপ্তি এদের কে টাকা দেয় তাদের পড়াশোনা আর খাওয়ার জন্য। শামীম অল্প কিছু টাকা এতিম খানায় আর মসজিদে দান করে। শামীম প্রতিদিন চাঁদের ফোনে তৃপ্তির সাথে কথা বলে আর প্রতদিনের সব কথা তৃপ্তি কে বলে। ভাইয়ের এত খুশি আর সুখ দেখে তৃপ্তিও অনেক খুশি সে এতদিন আল্লাহ কাছে প্রার্থনা করত তার ভাই যেনো একটু সুখে থাকে। শামীম মাঝে মাঝে চাঁদ কে ওর আব্বার কথা বলে আর কাঁদে।
দেখতে দেখতে ঢাকা শহরে শামীমের দুই বছর চলে গেলো। এর মাঝে তৃপ্তি বেশ কয়েকবার রংপুর থেকে ঢাকা এসেছিলো, শামীম চাঁদ তৃপ্তি সেকয়দিন এক সাথে তৃপ্তিদের বাসাতে ছিলো। আর কিছুদিন পর চাঁদ কে বিয়ে করবে শামীম সব কিছু ঠিক করে ফেলেছে শামীম। তো একদিন রাতে শামীম ঢাকা শহরের একটু দুরে একটা লাশ নিয়ে আসার জন্য যায়। লাশ নিয়ে আসার পথে হঠাৎ করে ননী গোপালের খুব জোরে প্রসাবের চাপ দেয় তাই গাড়ি রাস্তার একদিকে সাইড করে ননী গোপাল প্রসাব করতে যায়। হঠাৎ করে একটা মেয়ের গলার আওয়াজ শোনা যায় বাঁচাও বাঁচাও করে। শামীম ননী গোপাল বাদল চাঁদ সেই আওয়াজ অনুসরণ করে এগিয়ে যায়। কিছু দুর সামনে গিয়ে দেখতে পায় একটা নতুন বিল্ডিং তৈরী হচ্ছে আর তার আশেপাশে কিছুই নাই কোন জনমানব নাই আর সেই বিল্ডিং থেকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করতেছে একটা মেয়ে, ওরা চার জন দৌড়ে ওই বিল্ডিং এ ঢুকলাম। ঢুকে দেখে সাত টা ছেলে মিলে একটা মেয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করতেছে। ওরা তিনজন গিয়ে ছেলে গুলো প্রথমে হাত দিয়ে সরিয়ে দেয় তারপর মেয়েটাকে দেখে শামীমের বুক ছ্যাত করে উঠে।

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.