Header Ads

Header ADS

নিয়তি( এ কেমন ভালবাসা)----পর্বঃ ০৫


শামীম মহাখালী রেলগেট দিয়ে সামনে এগিয়ে ভি আই পি এলাকা বাসার ঢুকলো। বাসারের রাস্তা পরিবেশ দেখে শামীম অবাক এত সুন্দর জায়গা আমাদের দেশে আছে রাস্তা কি পরিষ্কার কত সুন্দর এক এক করে গাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু শামীম এটা জানে না যে এই এলাকা টা বিমান বাহিনীর দখলে তাই এত সুন্দর। বাসার থেকে শামীম আবারও মহাখালী রেলগেট আসে এবার সে মাথার উপর সেই চিটাগাং শহরের মত এখানেও ফ্লাইওভার দেখতে পায়। মানে মহাখালী ফ্লাই ওভার। শামীম এবার সামনে এগিয়ে যায় কিছু দুরে যাওয়ার পরে দেখে রাস্তার মাঝে ব্রিজের মত মানুষ যাওয়া আসা করতে কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো মানুষ শুধু সিড়ির কাছে চড়তেছে সিড়ি এমনিতেই উপরে নিয়ে যাচ্ছে। মহাখালীতে লিভ সিড়ি ফুটওভার ব্রিজ আছে সেইটা আর কি। শামীম হাটতে হাটতে সেনা নিবাস পর্যন্ত চলে এসেছে। সেনা নিবাসের জায়গা দেখে শামীম আরো অনেক খুশি। তো যাই হোক সেখান থেকে আবারো পিছনের দিকে চলে আসে কারণ দুপুর গরিয়ে বিকাল হয়ে গেছে পেঠে তার ইদুর দৌড়াচ্ছে অনেক জায়গা আজ সে হেটেছে। আবারো সেই রুটি কলার দোকানে গিয়ে শামীম রুটি আর কলা খেল, শামীম তো আর জানে না এখানে কোথায় ভাতের দোকান আছে। ঐ দোকানে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকে শামীম আবারো হাটতে হাটতে মহাখালী টিভি গেট মানে বৈশাখী টেলিভিশন সেন্টারের কাছে আসে। তার অপজিটে রয়েছে ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটি সেখানে অনেক ছেলে মেয়ে এক সাথে আড্ডা দিতেছে। শামীম একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখে একটা বড় বিল্ডিংয়ের সামনে একটা করে ছেলে একটা করে মেয়ে নিয়ে বসে আসে। তাদের থেকে একটু দুরে একটা ফাকা জায়গায় শামীম বসল এখন সে এখানে রাত্রি যাপন করবে।
__________________
শামীম যেদিন কুতুবদিয়া থেকে চলে আসে তার পরের দিন রহিম মিয়া শামীম কে খুঁজতে বের হয়। পুরা এলাকা খুঁজেও শামীম কে রহিম মিয়া পায় না। এই দিকে সোহেল আর করিম আজ মজুমদার বাড়িতে তার একমাত্র কন্যার বিয়ের কাজে ব্যস্ত, না হলে তাদের কে দিয়ে খোজ করাতো। শামীম কে সারাদিন রহিম মিয়া দেখতে না পেয়ে মনে মনে অনেক কাঁন্না করেছে। শামীম কে দেখতে না পেয়ে রহিম মিয়ার ভিতর ফেটে যাচ্ছে তিনি যতই তার কাছ থেকে শামীম কে দুরে যেতে বলুক না কেনো শামীম কে তার নিজের সন্তানের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। এদিকে অনেক আয়োজন চলছে মজুমদার বাড়িতে তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা কোন জিনিসের কমতি রাখে নাই। এলাকার প্রায় সব গুণি এবং সামত্তবান ব্যক্তিদের কে দাওয়াত দিয়েছে। যতই সবার মন খুশি থাকুক না কেনো, সৌরভ আর সুপ্রিয়ার মন খারাপ তার কারণ হলো শামীম। শামীম থাকলে কি আর না থাকলে তার জন্য তো আর সুপ্রিয়া সৌরভের বিয়ে থেকে থাকবে না। অবশেষে তাদেরও বিয়ে হয়ে যায় আর তারাও চিটাগাং চলে আসে।
______________________
শামীম কে সেখানে থাকা সিকিউরিটি গার্ড ঘুমাতে দিলো না তাই শামীম তিতুমীর কলেজের সামনে একটা ফুটওভার ব্রিজ আছে সেখানে গিয়ে শুয়ে পরলো মাথায় দিলো কাপড়ের পোটলা, মানে সেটা বালিস বানালো। কথায় আছে না অভাগা যেদিকে যায় সাগরের পানি সেখানেও শুকিয়ে যায় তাই আর শামীমের ঘুম পাড়া হলো না। রাতের অন্ধকারে কিছু মানুষ দুইটা পতিতা নিয়ে সেই ব্রিজের উপর উঠেছে। লোক গুলো তাদের কাজে ব্যস্ত আর শামীম ঘুমাতে ব্যস্ত, শামীম তো আর জানে না মাঝ রাতে ঢাকা শহরের এসব রাস্তায় পুলিশ ডিউটি করে। রাতে যখন পুলিশ দেখতে পারে ফুটওভার ব্রিজে বেশ কয়েকজন মানুষ তারা তাদের গাড়ি থামিয়ে ব্রিজে উঠতে ধরলে তারা ধীম ধীম শব্দ করে অন্য দিকের সিড়ি দিয়ে নেমে পালায়। সেই শব্দে শামীমের ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে তারা তারি সেখানে লাফ দিয়ে উঠে তার কাপড়ের পোটলা হাতে নেয় আর তার কাছে একটা পতিতা এসে দাঁড়ায়। পতিতাকে দেখে শামীম একটু দুরে যেতে চাইলে সেই সময় পুলিশ শামীম কে আর পতিতা মেয়েটাকে ধরে।
শামীমঃ স্যার আমি কিছু করি নাই আমারে ছাইরা দেন স্যার।
পুলিশঃ সব চোরেই একই কথা বলে।
শামীমঃ স্যার আমি কোন চুরি করি নাই, আমি তো এইখানে ঘুমাই ছিলাম।
পুলিশঃ সালা রাতের বেলা পতিতা নিয়ে এখানে ফুর্তি করিস আর বলিস কিছু করি নাই। যখন এই ডান্ডার বারি তোর গায়ে পরবে তখন সব স্বীকার করবি।
শামীমঃ স্যার পতিতা কি, আর এসব আপনারা কি কন?
পুলিশঃ ওরে আমার বাবু সোনা রে পতিতা চেনো না, এই মেয়েটা তাহলে তোমার কি লাগে?
শামীমঃ স্যার আমি এই মাইয়ারে চিনি না, এখনি দেখলাম মাত্র।
পুলিশ? সবাই যখন নতুন নতুন পতিতা নিয়ে ফুর্তি করে তখন সব পতিতাকেই তারা প্রথম দেখে।
শামীমঃ বিশ্বাস করেন স্যার আমি হেরে চিনি না কখনও দেখিও নাই। আর হের লগে আমার কোন সম্পর্ক নাই।
অন্য পুলিশঃ স্যার এই সব জানোয়ারদের জন্য আজ দেশে এত ধর্ষন বেড়ে গেছে। আজ পতিতা পাইছে এদের দিয়ে নিজের যৌবন জ্বালা মিটাচ্ছে, কাল যখন কোন পতিতা পাবে না তখন রাস্তা দিয়ে যাওয়া কারো বোন কারো মেয়ে কারো বউ কে এরা ধর্ষন করতে কোন আপত্তি করবে না। এই সব জানোয়ারদের জন্য আমাদের দেশের মেয়েরা রাতের বেলা কাজ শেষে নিজের বাসা যেতে ভয় করে।
অন্য পুলিশঃ স্যার এই বেটা রে ছেড়ে দিয়েন না,দেখলেন না কত গুলো মানুষ ছিলো। এরে থানায় নিয়ে গিয়ে আচ্ছা মত বানাইলে সবার নাম ঠিকানা বলবে আর এদের মুল মাথা কে তা বের হয়ে আসবে।
পুলিশঃ এই তুই বিয়া করতে পারিস না? তোর যদি এতই মেয়ে মানুষের প্রয়োজন হয় তাহলে বিয়ে না করে এসব কি?
শামীমঃ স্যার বিশ্বাস করেন আমি আইজকা এই শহরে পহেলা আইছি আমি কিছুই করি নাই আর কিছুই জানি না।
শামীম অনেক আকুতি মিনতি করলো কিন্তু শামীম কে পুলিশ ছাড়লো না। পতিতা মেয়েটা আর শামীম কে ধরে নিয়ে গেলো থানায়। অনেক রাত তাই আমাকে আর পতিতা মেয়েটাকে আর কোন করলো না সকালে নাকি থানার অসি আসবে তিনি নাকি যা করার সব করবে। এদিকে পতিতা মেয়েটা আমার দিকে বার বার কেমন করে তাকাচ্ছে আর তার এক ঠোঁট উপরের শাড়ির দাঁদ দিয়ে কামড়ে ধরতেছে। শামীম এমন বাজে মহিলা কখনও দেখে নাই তাই ওর থেকে একটু দুরে দাঁড়ালো শামীম। পতিতা মেয়েটা তার পেঠের নাভি বের করে একটা পুলিশ কে দেখিয়ে তার কাছে ডেকে নিয়ে আসল।
পতিতাঃ এই বাবু আমাকে ছেড়ে দে না, চাইলে তোরে মজা দিতে পারি কোন পয়সা নিবো না।
পুলিশঃ মন তো আমারো চাইতেছে কিন্তু বসে আছে পারবো না।
পতিতাঃ বের করে দে না, ঐ তো তোর কমরে চাবি আছে। বের হয়ে যেখানে নিয়ে যাবি সেখানেই যাবো আমি।
পুলিশঃ চাবি তো দেখলে হবে না, অনুমতি ছাড়া খুলে দিলে চাকরি থাকবে না। তোকে তো কাছে পেতে আমারো মন চায় কিন্তু আমি পারবো না বের করে দিতে।
পতিতাঃ না পারলে কি করার, এমন জিনিস তো আর পাবি না। এই বাবু তোমার ফোনটা দাও না( আহ্লাদিত সুরে)
পুলিশঃ মোবাইল কি করবি?
পতিতাঃ দে না একটা গান শুনি, আর আমার ফোন নাম্বার দিবো পরে যখন সময় পাবি আমাকে ফোন দিস বুঝলি।
তখন সেই পুলিস টা পতিতা মেয়েটাকে তার মোবাইল বের করে দেয়। পতিতা মেয়েটা মোবাইল হাতে নিয়ে একটা নাম্বার টিপে কাকে যেনো দিলো আর বলল সে থানায় আছে তাকে যেনো বের করে নিয়ে যায়। তারপর মোবাইল টা পুলিশ কে দিলো। সারারাত শামীম আর ঘুমাতে পারে নাই, ভয়ে শামীমের গলা শুকিয়ে গেছে না জানি কি হয় তার৷ তবে প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পুলিশ আর পতিতা মেয়েটার কথা শুনে শামীম বুঝতে পেরেছে তাকে কেনো ধরে আনা হয়েছে। পরের দিন সকাল বেলা থানার অসি আসলে তাকে রাতের কথা সব বলে দেয়। তখন অসি লকাপে ভিতরে ঢুকে শামীম আর পতিতা মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করে।
অসিঃ এই তোদের দুজনের নাম কি?
পতিতাঃ জরিনা সাহেব
শামীমঃ শামীম স্যার।
অসিঃ রাতে তোদের কি জন্য ধরে নিয়ে এসেছে তা কি জানিস?
পতিতাঃ এটা আবার নতুন কি এসব কাম করতে গিয়ে কতদিন কত থানায় আটকা পরছিলাম। কত অসি আমারে নিয়া মনোরঞ্জন করেছে তার ছেড়ে দিয়েছে।
এই কথা বলতে দেরি ঠাস পরে জরিনার গালে থাপ্পড় পরতে দেরি হলো না।
অসিঃ সবাই কে এক পাল্লায় মাপা ঠিক না বুঝলি সবাই এক হয় না। আর তুই সালা রাত বিরাতে মেয়ে নিয়ে এসব কাজ করিস।
বলতে বলতে শামীম কে লাঠি দিয়ে পেঠানো শুরু করে দিলো। এতদিন মজুমদারের মারে তেমন ব্যথা না পেলেও পুলিশের একটা মারে যেনো শামীমের কলিজা ফেঁটে যাচ্ছে। শামীম বার বার জোড়ে জোড়ে চিৎকার করে বলতে স্যার আমি কিছু করি নাই আর এই মহিলাকে আমি চিনা আপনের আল্লাহর দোহাই লাগে আমারে আর মারবেন না। কে শুনে কার কথা সবাই ধরা পরলে মার খেলে ঐ একই কথা বলে দোষ করে কি কেউ স্বীকার করে পুলিশ এটাই মনে করছে। তাই তো আসামির মুখ থেকে সত্য না শুনা পর্যন্ত মারতেই থাকবে। পুলিশ যখন শামীম কে মারতেছে সেই সময় একটা মোটা করে মহিলা থানায় আসল আর সাথে কালো পোষাক পড়া একজন পুরুষ।
মহিলাঃ এই যে অসি সাহেব জরিনারে ছাইড়া দেন ওর জামিনের কাগজ নিয়ে এসেছি।
অসি শামীম কে মারা বাদ দিয়ে ঐ মহিলা আর পুরুষ লোকটা কাছে গিয়ে কিসের জানি কাগজ নিলো। তারপর অন্য একটা পুলিস কে বলল জরিনাকে ছেড়ে দিতে। জরিনা যখন ওই মোটা মহিলার কাছে গেলো তখন তিনি জরিনা না কে বলতেছে মা*** ধরা পরার আর সময় পেলি না, তোর জন্য আর কত জায়গায় যাওন লাগবো। তোর এই রুপের কারণে তোরে আমার কাছে রাখছি না হলে কবেই তোরে।
পুলিশ আবার যখন শামীম কে মারতে গেলো এবার শামীম পুলিশের পায়ে পরলো।
শামীমঃ স্যার আল্লাহর কসম কইরা কইতাছি আমি এমর কাম জীবনেও করি নাই। আমারে আর মাইরেন না এবার মারলে আমি সত্যি মরে যাবো। আমি কালকে সকালে এই শহরে আসছি স্যার। আমি এই শহরের কোন জায়গা চিনি না, যেখানে ঘুমাইতে গেছি সেখান থাইকা আমারে তারাইয়া দিছে তাই বাধ্য হয়ে ঐ ব্রিজের উপর ঘুমাইছি। আমি আর ঐ ব্রিজের উপর কোন দিনও ঘুমাবো না স্যার আমারে তবুও আর মাইরেন না।
শামীমের এমন কথা শুনে পুলিশের মনে দয়া হলো। কারণ এই ধরণে আসামি কে বেশি মারা লাগে না দুই একটা বারি দিলেই সব গড় গড় করে স্বীকার করে নেয়। তাই অসি হাবিলদার কে বলে তাকে ছেড়ে দিতে বলল। হাবিলদার ছেড়ে দিয়ে ওর কাপড়ের পোটলা আবার শামীম কে দিয়ে বের করে দিলো।
হাবিলদারঃ স্যার বেটারে ছেড়ে দিলেন কেন?
অসিঃ মনে হয় না এমন কাজ করতে পারে সে।
হাবিলদারঃ স্যার যদি এবার সত্যি সত্যি এমন কাজ করে।
অসিঃ যে মাইর খাইছে তাতে মনে হয় না এমন কাজ করবে।
শামীম থানা থেকে বের হয়ে কোথায় যাবে তা নিজেও জানে না। শামীম ঠিক ভাবে হাটতেও পারতেছে না, যে মারটা মেরেছে জীবনের তরে ভুলতে পারবে না সে। তাছাড়া দুইদিন থেকে ঠিক ভাবে না খাওয়া তার উপর এই সব মাইর। কোন রকম হেটে সামনে একটা দোকানে দেখলো মুরগির মত কি যেনো আগুনের উপর লোহার রড দিয়ে টাঙানো। আর রুটি ঢলে বড় বড় ঘরে হাউজের মত ভিরতে দিতেছে। আসলে এসব হলো গিরিল আর নান রুটি। শামীম সেখানে না থেকে আরো সামনে এগিয়ে গিয়ে একটা দোকানে দেখলো ভাত বিক্রি করতেছে সেখানে শামীম ভাত খেয়ে আর সেদিন ওর এলাকার মানুষ ঔষুধ নিয়ে দিয়েছে কাপড়ের পোটলা থেকে সেই ঔষুধ বের করে খেলো যাতে শরীরের ব্যথা টা কমে। সেখান থেকে শামীম অনেক দুরে হেটে হেটে একটা লেকের মত জায়গা বসার জায়গা আছে শুয়ে থাকাও যাবে সেই জায়গায় পোটলা টা বালিশ করে শুয়ে পরলো। রাতের বেলা শামীমের সারা শরীর ব্যথা করতে লাগলো আর জ্বর এসেছে ব্যথার কারণে। শামীম জ্বরের ঘোরে কাতরাচ্ছে তবুও দেখার মত কেউ নাই। এই ভাবে এক দিন যায় দুইদিন যায় শামীমের পাশ দিয়ে অনেক মানুষ হেটে যায় তবুও সাহায্য করার মত কেউ নাই।
শামীম জ্বরে ঘোরে আর না খাওয়াতে প্রায় অনেক টা দুর্বল হয়ে গেছে, শামীমের পাশ দিয়ে হাতে করে চা বিক্রি এমন হকার যাচ্ছে আর বলতেছে চা চা লাগবে। তখন শামীম সেই লোকটা কাছ থেকে রুটি আর চা নিয়ে খায় আর সে যেহেতু কোথাও যেতে পারবে না তাই আরো তিন চার টা রুটি আর কেক নিয়ে নিজের কাছে রাখে। প্রথমে শামীম ভেবেছিলো এই শহরের মানুষ মনে হয় অনেক ভালো কিন্তু এখন বুঝতে পারতেছে ইট পাথরের মত তাদের মনটাও। দেখতে দেখতে এক-সপ্তাহ চলে যায় শামীম সুস্হ হয় না। একদিন রাতে একচোর শামীমের পোটলা নিয়ে দেয় দৌড় ভাগ্যক্রমে তার ছোট বেলার ফটো টা পরে যায়। শামীম ফটো টা হাতে নিয়ে সেই চোরের পিছনে দৌড়াতে থাকে আর চোর চোর বলতে থাকে। কিন্তু কেউ সাহায্য করতে আসে না৷, ওই পোটলার মধ্যে খাবারের টাকা আছে এখন খাবে কি করে শামীম টাকা কোথায় পাবে?
আজ তিনদিন ধরে শামীম না খাওয়া, ক্ষুদার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কাজ খোজার উদ্দেশ্য বের হইছে। যার কাছে কাজ যায় সেই তারিয়ে দেয়, কেউ যদি বলে কোন কোন কাজ যানো তখন শামীম ওই লবণ চাষ আর বাড়ির কাজ পারে সেই কথা বলে। এসব কাজের জন্য তোর মানুষ কাজের মানুষ নেয় না। কোথাও যখন কাজ না পেয়ে সন্ধ্যার দিকে ঢুলতে ঢুলতে সেই লেকের পারে আসবে শামীম হঠাৎ করে একটা গাড়ির সামনে পড়ে গেলো। গাড়ি থেকে ড্রাইভার আর একজন ভদ্র লোক বের হয়ে দেখে ছেলেটা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তাই তারা তাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। লোক টা নিজেই একজন ডাক্তার নিজের ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরতে ছিলো আর তাতেই এই ঘটনা। তারপর ঐ ডাক্তার অন্য ডাক্তার কে শামীমের চিকিৎসার কথা বলে চলে যায়।
পুরা দুইদিন পর শামীমের জ্ঞান ফিরে, তখন সেই ডাক্তার টা শামীমের কাছেই ছিলো। শামীমের জ্ঞান ফেরা দেখে ডাক্তার আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে।
ডাক্তারঃ এখন কেমন আছো বাবা?
শামীমঃ জ্বী একটু ভালো। আচ্ছা আমি কোথায়?
ডাক্তারঃ তুমি আমার গাড়ির সামনে পরে অজ্ঞান হয়ে যাও, তাই তোমাকে গত পরশু রাতে এখানে আমি নিয়ে আসি আর আজ তোমার জ্ঞান ফিরলো।
শামীমঃ দুইদিন থেকে আমি অজ্ঞান?
ডাক্তারঃ তোমার কি হইছিলো? আর এভাবে হঠাৎ গাড়ির সামনে পরে গেলে আর তোমার শরীর দেখে তো মনে হচ্ছে তোমাকে কেউ নিয়ম করে মারে?
ডাক্তারের কথা শুনে শামীম কাঁন্না করে দিলো৷ ডাক্তার ভাবতেও পারে নাই তার এমন কথাতে এই ছেলেটা কাঁন্না করে দিবে। তাই তিনি এবার শামীমের কাছে গিয়ে
ডাক্তারঃ আমি কি তোমাকে খারাপ কিছু বলেছি বাবা?
শামীমঃ না
ডাক্তারঃ তাহলে
শামীমঃ শুনবেন সেই করুন কাহিনী
ডাক্তারঃ হ্যাঁ বলো আমি শুনবো।
শামীম তখন তার সেই ছয় বছর জীবন কাহিনি থেকে শুরু করে ঢাকা শহরের ডাক্তারের গাড়ির সামনে পড়ে যাওয়া পর্যন্ত সব ঘটনা সে বলল। শামীমের সব কথা শুনে ডাক্তারের চোখ দিয়ে পানির স্রোত বইতে লাগলো। ডাক্তার তার জীবনে এমন করুন ঘটনা দেখেনি বা শুনেনি।

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.