Header Ads

Header ADS

ভালোবাসায়_বেধে_রেখো💞 পর্বঃ০৪

বাড়িটার সামনে আসতেই তাহমিরা অবাক এটাতো ত্রিশাদদের বাড়ি।মেয়েটা তাহমিরাকে উদ্দেশ্য করে বলল
"ম্যাডাম চলুন এটাই আমাদের বাসা।"
তাহমিরা বিষ্ময় কাটিয়ে মেয়েটার সাথে ঘরে গেলো।তাহমিরাকে দেখে মেয়েটার মা তাকে বসতে দিলো।তারপর দেয়ালে চোখ বুলাতেই দেখতে পেলো তারিফ,ত্রিশাদ আর মেয়েটার একটা হাস্যোজ্জ্বল ছবি।তাহমিরা বুঝতে পারলো মেয়েটা ত্রিশাদের বোন।মেয়েটা বই খাতা তাহমিরার সামনে রেখে পড়তে বসলো।তাহমিরা ওকে জিগ্যেস করলো
"তোমার নামটাই তো জানা হলো না।তোমার নাম কি?"
"ইশিতা হোসেন।আপনার নাম কি ম্যাডাম?"
"তাজবিহা জান্নাত তাহমিরা।আচ্ছা তোমরা কয় ভাই বোন?"
"তিন ভাই বোন। বড়ো দুটো ভাই আছে আমিই ছোট।"
"তাহলেতো অনেক আদর পাও।"
"হুম দুই ভাইয়া ই আমাকে অনেক আদর করে।"
"আচ্ছা এখন পড়া শুরু করি।"
"আচ্ছা ম্যাডাম।"
তাহমিরা পড়াতে পড়াতে একবারও ওদের দুই ভাইকে কোথাও দেখলো না।বোধহয় দুজনে বাইরে গেছে। পড়ানো শেষ করে তাহমিরা চলে গেলো।
ত্রিশাদ আর তারিফ দুজনে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলো। ফিরে এসেই শুনলো ইশিতাকে নতুন একটা ম্যাডাম পড়িয়ে গেছে। তারিফ ইশিতার মাথায় টোকা দিয়ে বলল
"ম্যাডামের নাম কি রে?"
"বলবো আগে ঘুষ দাও দশটাকা।"
তারিফ মুখ ভেংচি দিয়ে বলল
"আসছে দশ টাকা নিতে যা ভাগ কালকে আসলেইতো ম্যাডামের নাম জানা যাবে।"
ইশিতা মুখ বাঁকা করে চলে গেলো।
এদিকে তাহমিরা ইশিতাকে পড়িয়ে এসে ফ্রেশ হয়ে নিজেও পড়তে বসে।পড়ালেখা শেষ করে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লো।সকালে উঠতেই তাহমিরার মা তড়িঘড়ি করে এসে একটা নীল রঙের শাড়ী দিয়ে বলল
"তাহু এই নে শাড়ীটা পড়ে নে।"
তাহমিরা ভ্রু কুচকে জিগ্যেস করলো
"কেনো মা?"
"তোকে দেখতে আসছে।"
"মা তোমাদের কতোবার বলবো যে আমি এখন বিয়ে করবো না।রাগ উঠিয়ো না।জানোই তো রাগ উঠলে আমি কি করবো।"
তাহমিরার মা অপরাধীর মতো মুখ করে বলল
"দেখতেই তো আসছে বিয়েটাতো আর হচ্ছে না।প্লিজ তুই না করিস না।তুই না গেলে তোর আমাদের অপমান হবে।"
তাহমিরা রাগে গজগজ করতে করতে বলল
"আচ্ছা যাও আসছি।"
তাহমিরা শুধু শাড়ীটা পড়েই বেরিয়ে পড়লো কোন প্রকার সাজুগুজু করে নি।রান্নাঘরে যাওয়ার পর ওর মা ওকে দেখে বলে
"একটু লিপস্টিক আর কাজল দিয়ে আয়।"
"তোমার মন চাইলে তুমি দিয়ে আসো আমাকে আর জোরাজুরি করলে কিন্তু একেকটার আস্ত রাখবো না।"
ভয়ে আর কিছুই বলতে পারলো না তাহমিরার মা।মেয়েকে চা হাতে পাঠালো ওদের সামনে। তাহমিরা চায়ের ট্রে টা রেখে সামনাসামনি একটা সোফায় বসে পড়লো।চশমা পরা একটা মহিলা বলল
"মা এদিকে এসে আমার পাশে বসো।"
তাহমিরা রাগটা দমিয়ে বাধ্য মেয়ের মতো গিয়ে মহিলাটার পাশে বসলো।মহিলাটা তাহমিরাকে জিগ্যেস করলো
"তোমার নাম কি মা?"
"তাজবিহা জান্নাত তাহমিরা।"
"কোন ক্লাসে পড়ো?"
তাহমিরার এই মুহুর্তে ইচ্ছা করছে ক্লাস টু তে পড়ি বলতে।এরাতো সব জেনেই এখানে এসেছে তারপরেও এতো ঢংয়ের কি হলো।রাগ সামলে বলল
"অনার্স ২য় বর্ষে উদ্ভিদবিজ্ঞানে।"
মহিলাটা তাহমিরার বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলল
"ভাই সাহেব আপনার মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে। "
তাহমিরার বাবা কিছু বলার আগেই তাহমিরা মহিলাটাকে উদ্দেশ্য করে পাশে বসা ছেলেটাকে দেখিয়ে বলল
"আমি একটু ওনার সাথে আলাদা কথা বলতে চাই।"
মহিলাটা হাসি মুখে বলল
"যাও মা কথা বলে আসো।"
তারপর তাহমিরা ছাদের সিড়ি ধরে উঠছে ছাদে যাওয়ার জন্য আর মনে মনে বলছে আহ!বিয়ে করার কতো শখ চল তোকে মজা বোঝাচ্ছি। '
ছাদে এসে দাড়াতেই তাহমিরা ছেলেটাকে জিগ্যেস করলো
"নাম কি?"
"শুভ চৌধুরী। "
"কি করেন?"
"ডাক্তারি। "
"ও... আমাকে পছন্দ হয়েছে? "
ছেলেটা লাজুক হেসে বলল
"হুম।"
তাহমিরা ঠোঁট বাকা করে মনে মনে বলল'এহ!আবার লজ্জা ও পায়।'তারপর স্বাভাবিক কন্ঠেই বলল
"আমার আপনাকে পছন্দ হয় নি।"
ছেলেটা ভ্রু কুচকে বলল
"কেনো?"
"পছন্দ না ই হতে পারে তার জন্য কি আপনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি?"
"এভাবে কথা বলছেন কেনো আপনি?"
"তো কি বরণ ডালা সাজিয়ে আপনাকে চেয়ারে বসিয়ে বাতাস করতে করতে কথা বলবো।সোজা গিয়ে সবাইকে বলবেন আপনার আমাকে পছন্দ হয় নি।"
"মিথ্যা বলতে পারবো না।"
"ওরে আমার সত্যবাদী ওটা না বললে এক চড়ে দাত সব ফেলে দিবো।আমারেতো চিনো না।"
"যেটাই হোক আমি সত্যিটাই বলবো"
এটা বলে ছেলেটা নিচে গিয়ে সবাইকে বলল যে তাহমিরাকে তার পছন্দ হয়েছে। তাহমিরা রাগে গজগজ করতে করতে রুমে গিয়ে তন্ময়কে কল করলো
এদিকে তন্ময় তাহমিরার কল পেয়ো খুশীতে মনে হয়ে পাগল হয়ে যাবে এই অবস্থা।ফোন রিসিভ করতেই তন্ময় বলে উঠলো
"আমি জানতাম একদিন তুই ঠিকই আমাকে ভালোবাসবি।"
তাহমিরা বিরক্তি ভরা কন্ঠে বলল
"রাখো তো তোমার ফাউল পেচাল রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে। "
তন্ময় চিন্তিত হয়ে বলল
"কি হয়েছে তোর?"
তাহমিরা পুরোটা বলার পর তন্ময় বলল চিন্তা করিস না কাল সকালেই দেখবি ছেলেটা না করে দিয়েছে। তাহমিরা হেসে বলল
"থ্যাংকু ভাইয়া। "
তন্ময় আবেগী কন্ঠে বলল
"থ্যাংকু না বলে যদি অন্যকিছু বলতি তাও খুশী হতাম।"
কিন্তু তন্ময়ের কথা তাহমিরার কানে পৌঁছালো না তার আগেই ও ফোন কেটে দিলো।
তারপর শাড়ীটা খুলে রেডি হয়ে ভার্সিটিতে চলে আসলো।ক্লাস শেষ করে ইশিতাদের বাসায় গেলো।ইশিতা ই দরজা খুললো।তাহমিরা ইশিতাকে পড়াতে বসেছে। হঠাৎ কেউ একজন ওর দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
"হাই,আমি তারিফ হোসেন।"
তাহমিরা মুখ তুলতেই তারিফ অবাক হয়ে বলল
"আরে আপনি?"
"হ্যাঁ আপনার বোনকে আমিই পড়াই।"
"ও আচ্ছা পড়ান।পড়া শেষ হলে ভাইয়ার সাথে দেখা করে আইসেন আমি একটু বাইরে গেলাম।"
তাহমিরা হালকা হেসে বলল
"আচ্ছা। "
তারিফ যাওয়ার পর ইশিতা তাহমিরাকে কৌতুহলী হয়ে জিগ্যেস করলো
"ম্যাডাম ভাইয়া কি আপনাকে চেনে?"
তাহমিরা হেসে ইশিতাকে প্রথম থেকে সব বলল শুধু তারিনের কথাটা বাদে।ইশিতা হাত মুট করে বলল
"আজকে তারিফ ভাইয়া আসুক ওর একদিন কি আমার একদিন আমাকে একদিনও ফুচকা খেতে নিয়ে যায় না।"
ইশিতার এক্সপ্রেশন দেখে তাহমিরা হাসতে হাসতে বলল
"আচ্ছা আগে আসুক।এখন আমরা পড়া শুরু করি।"

তারপর ইশিতাকে পড়িয়ে তাহমিরা ত্রিশাদের রুমে গিয়ে দেখলো.......

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.