Header Ads

Header ADS

তোকে_অনেক_ভালোবাসি------পর্ব_৩

বেডের উপর ফুচকা আর অনেকগুলো চকলেট রাখা,খুশিতে মনটা নেচে উঠলো। কে রেখেছে দেখার সময় নেই। একলাফে বেডে উঠে বসে আগে ফুচকা খেতে শুরু করলাম,ঝালটা একটু বেশি হয়েছে চোখ থেকে টপাটপ পানি পড়ছে।ঝাল বেশি লাগছে তাই চকলেট হাতে নিলাম,তখনি কেউ বলে উঠলো...
কি খাদক রে বাবা! একটু আগে ডিনার করে আসলো আর এসে আবারো গিলছে!!
আমি সামনে তাকিয়ে দেখলাম আদ্র ভাইয়া হাত ভাজ করে দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে,ঠোঁটে লেগে আছে মুচকি হাসি। আমি চকলেট খেতে খেতে বললাম....আমি মটেও খাদক নই হুম,চকলেট ফুচকা এগুলো আমার সবথেকে প্রিয় খাবার এগুলো সামনে পেয়ে আমি না খেয়ে বসে থাকবো? কখনোই না। তোমার যদি খেতে ইচ্ছে করে তো বলো একটু চকলেট দিবো।
একটু কেনো??
পুরোটা চাও নাকি হুম? পুরোটা তো দেওয়া যাবে না। একটু দিতে চেয়েছি সেটাই তো অনেক।
তোর একটু আমার লাগবে না তুই খা। আচ্ছা আরু এত রাতে তোকে এসব কে এনে দিয়েছে?
কে এনে দিয়েছে জানি নাতো,রুমে এসে দেখলাম বেডের উপর রাখা খেতে বসে পড়লাম।
সে কিরে! ভূতে রেখে যায় নি তো আবার!!
ভাইয়া একদম মজা করবে না ভূত আসবে কোথা থেকে। হয়তো বড় চাচ্চু বা আব্বু এনেছে আবার হয়তো তুমিও আনতে পারো।
আমার কথা শুনে আদ্র ভাইয়া একটু অবাক হওয়ার ভান করে বললো...আমার কি মাথা খারাপ হয়েছে, তোর জন্য এই রাতে এগুলো আনবো আমি।
ঠিকআছে ঠিকআছে কে এনেছে এসব জানার দরকার নেই আমার। আচ্ছা আমি তোমার সাথে কথা বলছি কেনো? তোমার জন্য আজ আমার বেস্টু আমার উপর রাগ করেছে,কথা নেই তোমার সাথে যাও তুমি।
আমি কি করেছি যে তোর বেস্টু রাগ করেছে??
অনেক কিছু করেছো। এখন যাও তো খেতে দাও আমাকে,তখন থেকে তাকিয়ে আছো আমার পেটে ব্যাথা করবে না বুঝি!
যাহ বাবা, এ মেয়ে বলে কি!!ওই তোর খাওয়ার দিকে আমি কেনো তাকিয়ে থাকবো? এগুলো এনে দিলাম আমি,আর আমাকেই কথা শোনাচ্ছ!!
আমি বড় বড় চোখে তাকিয়ে বললাম কি বললে! এগুলো তুমি এনেছো??
ককই নাতো,এটা বলেছি নাকি। তুই হয়তো ভুল শুনেছিস। আমি এখন যাচ্ছি হ্যা। আদ্র ভাইয়া চলে গেলো,আমি ভাবছি উনি তো নিজেই বললো এগুলো উনি এনেছে আবার বলে ভুল শুনেছি!! ধেত এসব ভেবে আমার কোনো কাজ নেই,আমার জন্য এনেছে আমি খেতে থাকি।
.
.
আজ শুক্রবার সবাই আজ বাড়িতেই আছে। ড্রয়িংরুমে বসে আমি টিভিতে হিন্দি গান দেখছি আমার পাশে অথই আমার ফোনটা নিয়ে গেম খেলছে। হঠাৎ আদ্র ভাইয়া এসে আমার হাত থেকে রিমোট টা নিয়ে চ্যানেল পাল্টে দিলো। আমি বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বললাম...ভাইয়া এটা কি হলো??
কই কি হয়েছে??
তুমি চ্যানেল পাল্টালে কেনো আমি গান দেখছিলাম দেখো নি তুমি??
হুম দেখেছি,তার জন্যই তো চ্যানেল পাল্টে দিলাম। এসব কি গান শুনছিলি তুই!! এসব বড়রা শোনে তুই তো এখনো ছোট এসব গান আর শুনবি না বুঝলি।
একশো বার শুনবো,হাজার বার শুনবো। শোনো ভাইয়া আমি মটেও ছোট নই সামনে ইন্টার পরীক্ষা দিবো হুম। এখন রিমোট দাও।
খুব বড় হয়ে গেছিস তাইনা? আচ্ছা রিমোট দিবো আগে যা আমার জন্য কফি করে নিয়ে আয়।
কিহ! আমি কফি করে আনবো!! তখনি অথই ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো...ভাইয়া তুমি আর মানুষ পেলে না! আরিশা আপু কফি বানাতে পারে নাকি শুনে দেখো তো?
এবার আমার রাগ উঠে গেলো এতদিন তো আদ্র ভাইয়া আমার পেছনে লাগতো আর এখন এই অথই টাও কিছু না কিছু বলে আমাকে ছোট করে। কি সমস্যা ওদের দুভাই বোনের আল্লাহ জানে। আমি অথই এর হাত থেকে আমার ফোনটা টেনে নিয়ে বললাম...এই আমি না তোর বড় আপু হই তুই আমাকে এভাবে ছোট করলি! আমার ফোনে তোকে আর গেম খেলতে দিবো না,তোর ভাইয়ের ফোন নিয়ে খেল। আর শোন আমি তো পারি না কফি করতে যা না তুই তোর ভাইকে কফি করে খাওয়া।
আমার দিকে তাকিয়ে আদ্র ভাইয়া মুচকি হাসছে আর অথই হয়তো ভাবছে কি বলবে এখন। এর মধ্যেই কাকিমা এসে বললো...আরিশা কি হয়েছে এভাবে চেঁচিয়ে কথা বলছিস কেনো??
তোমার ছেলে মেয়েকেই জিগ্যেস করো না কি হয়েছে। তোমার ছেলেটা তো সুযোগ পেলেই আমাকে বকে। অথই টাও কম যায় না ও যে আদ্র চৌধুরীর বোন এটা ও বুঝিয়ে দেয়।
কাকিমা অথইকে বললো....অথই কি বলেছো আপুকে??
আসলে মা ভাইয়া আপুকে কফি করে আনতে বলেছিলো,আমি বলেছি ভাইয়া আরিশা আপু কফি বানাতে পারে নাকি শুনে দেখো তো।
অথই আরিশা তোমার বড় আপু আর যদি কখনো এরকম কথা বলো তখন তোমার খরব আছে। আর আদ্র তোকেও বলি বাড়িতে আমি আছি তোর ছোট কাকিমা আছে আমাদের বলতি কফি করে দিতে আরিশাকে কেনো বলেছিস। ওকে এসব করতে হবে না আমরা আছি কি করতে।
মা ওকে একটু কাজকর্ম কিছু শেখাও শশুর বাড়ি গিয়ে তো কিছুই করতে পারবে না।
তোকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। আরিশা আমাদের কাছেই থাকবে। আরিশা মা যা তো তোর চাচ্চু বাগানে আছে ডেকে নিয়ে আয় নাস্তা করতে হবে তো।
কাকিমাকে জড়িয়ে ধরে বললাম...কাকিমা তুমি খুব ভালো। লাভ ইউ,এখনি যাচ্ছি আমি।
আমি চলে আসতেই কাকিমা আদ্র ভাইয়াকে বললো...ওর পেছনে আর লাগবি না বলে দিলাম,সব সময় দেখি কিছু না কিছু বলে ওকে রাগিয়ে দিস। আর যেনো এমন কিছু না দেখি।
কাকিমা চলে গেলো আদ্র ভাইয়া নিজে নিজে বলতে লাগলো...মাঝে মাঝে বুঝতেই পারি না এটা আমার মা নাকি ওই পাগলিটার মা!!
.
.
বিকেলে ব্যালকনিতে বসে গান শুনছি আর গুনগুন করে গাইছি হঠাৎ অথই এসে পেছন থেকে আমার গলা জড়িয়ে ধরলো,আমি বেশ বুঝতে পারছি নিশ্চই কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে। আমি ওর হাত ছাড়িয়ে বললাম...হয়েছে এত আদর দেখাতে হবে না কি বলতে এসেছিস সেটা বল??
আপু তুমি আমার উপর রেগে আছো??
অথই এর মুখের দিকে তাকিয়ে ওর ইনোসেন্ট ফেস দেখে ফিক করে হেসে দিয়ে বললাম...না বনু আমি আর রাগ করে নেই বল কি বলবি??
আপু বলছিলাম কি অনেক দিন ফুচকা খাওয়া হয় না,চলো না আজ ফুচকা খেয়ে আসি।
আমি তো কাল রাতেও.....এই রে কি বলতে যাচ্ছিলাম আমি! নাহ ওকে বলা যাবে না। কথা ঘুরিয়ে বললাম চাচ্চু আর আব্বু তো আজ বাড়িতে কি বলে যাবো আমরা??
ও নিয়ে তুমি ভেবো না সবাইকে ম্যানেজ করেই তোমার কাছে এসেছি। এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও তো।
বাহ,তুই তো অনেক ফাস্ট হয়ে গেছিস। বাট তোর ভাই টা কোথায় সে বাধা দিবে না তো??
ভাইয়া বাড়িতে নেই রাতের আগে ফিরবেও না।
হুমম ভালো হয়েছে,তুই যা রেডি হ আমিও রেডি হয়ে আসছি।
.
আমি আর অথই ফুচকা খাচ্ছি। আমাদের ডান পাশে ফুলের বাগান আর বা পাশে বড় একটা লেক খুব সুন্দর একটা জায়গা,গোধুলি বিকেলের রোদ পানিতে এসে পড়েছে হালকা বাতাস বইছে যার কারনে পানি ঢেউ দিচ্ছে রোদের আলোতে পানি ঝিলমিল করে উঠছে। অপরুপ মনোমুগ্ধকর একটি দৃশ্য।
আমি অথই এর সাথে দু একটা কথা বলছি আর এদিক ওদিকে তাকিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করছি। হঠাৎ চোখ পড়লো আমাদের থেকে কিছুটা দূরে একটা ব্রেঞ্চের দিকে....আমার চোখ দুটো রসগোল্লার মত বড় হয়ে গেলো অথইকে হাতের ইশারা করে তাকাতে বললাম ওর ও আমার মত সেম অবস্থা।
অথই অবাক হয়ে বললো আপু আমরা যা দেখছি ঠিক দেখছি তো??
ভুল দেখার কি আছে? চল এখন বাড়ি যাই এখানে আর থাকা যাবে না। বাকীটা বাড়িতে গিয়ে বুঝে নিবো।

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.